▼
ইসলামের পথে অন্তরাই
ইসলামের পথে অন্তরাই
আব্দুল হান্নান
প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক সভ্যতার যুগে শয়তান যতটা খুশি হয়েছে পৃথিবী সৃষ্টির পর এত খুশি হয়েছে কিনা অজানা।প্রযুক্তি ভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন দেখে আমরা প্রাথমিক পর্যায় খুশি হলেও নানা ধরনের অপকর্ম যখন বৃদ্ধি পেলো তখন ভালোমন্দ দিক বিবেচনার কথা অসলো।তথ্য প্রযুক্তি একদিকে যেমন আশির্বাদ অন্যদিকে অপব্যাবহারে জাতির জন্য বয়ে আনে অভিশাপ।আগেকার দিনে আমরা আলেম উলামা মৌলভীদের কাছ হতে দ্বীন শিখেছি। ওয়াজ নছিহতের মাধ্যমে অনেক কিছু জেনে শুনে মানুষ সংশোধিত হয়েছে।আগেকার দিনে বেশিরভাগ ওয়াজ নসিহত হতো মাদ্রাসা,মসজীদ,ঈদগাহ,কখনো কখনো এখনকার মত মাঠে ,তবে এখনকার মত জাকজমক করে না হলেও যাই হতো তাতে যেন প্রাণ থাকতো।তখন ওয়াজ নসিহত খুব কমই রেকর্ড করা হতো।ভিডিও তো প্রশ্নই জাগেনা।কোন গ্রামে ক্যাসেট থাকলে সেখানে রেকর্ড করা হতো পরবর্তীতে সেগুলো শোনা হতো।ঐ সময় আলেমদের ভিতর এত মতাদ্বন্দ ছিলোনা,কিছু মতের পার্থক্য থাকলে একজায়গায় বসে তার সমাধান করতো,সাধারণ মানুষ বলতো বাহাস হবে,উভয় আলেম যখন একত্রিত হতো একজন আর একজনকে দেখে জড়িয়ে ধরে মুসাফার মাধ্যমেই সব শেষ হয়ে যেত।আস্তে আস্তে আধুনিকতা যখন ছড়িয়ে পড়লো মানুষ যখন প্রযুক্তির সাথে প্রাথমিক পরিচিতি লাভ করলো তখন ইসলামী আচার অনুষ্ঠান গুলোর ভিডিও ধারন শুরু হলো।উনবিংশ শতাব্দীর শেষ অবদী পযর্ন্ত আলেম উলামাদের সহনশীল একটা প্লাটফরম ছিলো।আলেম উলামাদের ভিতর কিছু মতানৈক্য থাকলেও এত হিংসা,বিদ্বেশ,হিংস্র আচরণ ছিলোনা।বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে প্রযুক্তি যখন বেড়লোকদের হাতের কাছে আসলো তখন হাতের মুঠোতেই অডিও ভিডিওর মাধ্যমে ওয়াজ নসিহত গান বাজনা শোনার একটা মাধ্যম নুতন করে শুরু হলো।কিছুদিন পর যখন প্রযুক্তি মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের হাতের নাগালে আসলো তখন হতে ঢালাও ভাবে মানুষের হাতে পাপপুন্য উভয় ধরনের জিনিষ হাতে আসলেও মানুষের ভিতর এবং আলেমদের ভিতর বিভাজন তখন ও হয়নি।কিছুদিন পর যখন ফেসবুক ইউটিউব মানুষের হাতে আসলো তখন শয়তান দেখলো এখন একটা সুযোগ সে ভিডিও এডিটিং সফ্টওয়ার বানানোর পরামর্শ দিলো। যাতে করে বক্তব্যকে ছাটকাট,এককথা আর এক কথার সাথে জুড়ে প্রপাকান্ড এবং গীবত তহমতের এর মাধ্যমে এক আলেমকে আর এক আলেমের পিছে লাগিয়ে দিয়ে দূরে বসে বসে মজার খেলা উপভোগ করা যায়।শয়তান দেখলো আলেমে আলেমে যতটুকু বিভাজন হয়েছে তা যথেষ্ট নয়,সমগ্র উম্মাহর ভিতর কিভাবে বিভাজন সৃষ্টি করা যায় সে জন্য শয়তান এবার অনুসারীদের পিছে লাগা শুরু করলো।শয়তান অনুসারীদের বললো তোর হুজুরকে ওরা গালি দেয়, তুই ও গালী দে।একজন আর একজনকে গালী, গীবত ,অপপবাদ,একদল আর একদলকে গালি,কওমীরা আলিয়াদের গালী,আলিয়ারা কওমীদের গালী ধর্মের ভিতরে একটা বিভাজন করে সাধারণ মানুষের সামনে ইসলামটাকে বিষদগারে পরিনত করলো।অনেকে আলেমের সুরত ধরে এদেশে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেবার জন্য বিভিন্ন কেচ্ছা কাহিনী শুনিয়ে আসছিলো,তাদের ওয়াজে দেশে ধর্ষন বন্ধ হয়নি,মদগাজা কমেতো না ই বেড়েছে,যুবকদের হাতে নীলছবির অভয়ারন্য এই মুহুর্তে যুবকদের কনভিন্স করে যে সমস্ত বক্তারা মাঠে কাজ করতে নেমেছে,ঐ কিচ্ছা বাহিনী আর মাজার এবং গাঁজার পুজারীরা রাষ্টশক্তির নিকট তাদের নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কানভারী করেছে এবং নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। এখন একজন আর একজনের চোখে, দেখতে নারী চলন বাঁকা।এই মুহুর্তে কোন ভালো আলেম যদি প্রকৃত দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে আসে এবং ঐ সমস্ত চান্ডাল আলেমদের ভাষায় কথা না বলে তখন ঐ চান্ডালেরা বিভিন্ন অযুহাতে তার পিছে লেগে তার বারোটা বাজিয়ে তারপরে ছাড়বে।এই মুহুর্তে ঈমাম মাহদী যদি দুনিয়াতে আসে তবে ওদের কিচ্ছা কাহিনী আর ওদের পক্ষে কথা না বললে তাকেও ওরা মোনাফেক বলবে।ফেসবুক এবং ইউটিউবের কাটপিচ ভিডিও গুলো মুসলিম মিল্লাতের ভিতর বেশি ফেৎনা ও বিভাজন সৃষ্টি করছে।যারা নাস্তিক এবং মোনাফেক তারা এসমস্ত আচরন হতে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করার একটা মোখখোম শক্তি পায়।যেখানে আমাদের প্রিয় নবী সঃ বলছেন,প্রকৃত মুসলিম সেই ব্যক্তি যার জবান এবং হাত হতে আর এক মুসলমান নিরাপদ থাকে।এদেশে বড় নামকরা বক্তারা যারা উপরে উপরে সুন্নতি সুন্নতি করে পাগল, তারাই এই হাদিসের আমল ভঙ্গ করে চলছে,বক্তা হাজার হাজার মানুষকে সামনে নিয়ে এমন আলেমকে মোনাফেক বলছে যার মধ্যে মোনাফেকের লক্ষন ও নেই,গীবত করছে,অপবাদ দিচ্ছে ,সুতরাং এর জবান হতে আর এক মুসলমান নিরাপদ হলো কোথায়? ওদের অনুসারীরা হাত দ্বারা ভিডিও এডিটিং করে আর এক বক্তাকে ছোট করার জন্য মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাহলে তাদের হাত হতে আর এক মুসলমান নিরাপদ হলো কোথায়? এই হাদিসের উপরে আমল না করাই ইসলামের ঐক্যের পথে প্রধান অন্তরায়।আপনি মাহফিলে বলেন,হাজার হাজার পৃষ্ঠা কিতাব পড়েছি,আকাবেরদের সোহবত পেয়েছি, এই হাদিসটা তখন কৈ ছিলো?কোন আকাবের আপনাকে এই হাদিসের আদেশ অমান্য করে মানুষের পিছে লাগতে বলেছে?মানুষের গীবত করতে বলেছে,অপবাদ দিতে বলেছে? কেউ বলেনি আপনি হিংসায় এগুলো করছেন,আপনার ভন্ডামীর পুঁজিপাটা জঘাটা যাবার জন্য প্রকৃত সত্যের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছেন।মনে রাখবেন বাংলার যুব সমাজের ভিতর ইসলামের প্রতি যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে তাতে ঐদিন আর বেশি দূরে নাই যেদিন তারা আপনাদের এই মন্তব্য অনৈক্য আর গালিগালাজকে ডাষ্টবিনে নিক্ষেপ করবে ইনশা আল্লাহ।আমি একটা তুলনা করতে চাই,দাড়ি,টুপি,পাঞ্জাবী পরে যদি একটি ছেলে নামাজ ও পড়ে আবার আর এক টুপি ,দাড়ী,পাঞ্জাবী ধারীর উপর মিথ্যারোপ করে,গীবত করেঅপবাদ দেয় সে ভালো?না যে ছেলেটা নামাজ পড়ে দাড়ি রেখে সার্টপ্যান্ট পরে কিন্ত কারো গীবত করেনা,অপবাদও দেয়না সে ভালো? তার মানে এটা না আমি সার্ট প্যান্টের পক্ষে মতামত দিচ্ছি।তুমিতো ছোট বেলা হতে এগুলো পরছো, এখনো গীবত,তোহমত,পিছে দোষ খোজা ছাড়তে পারোনি,কি লাভ হলো এই পোশাকে?তোমার এই পোষাক লোক দেখানো পোশাক,মানুষকে থোকাদিয়ে বোকা বানাবার নিয়তে তুমি এই সুরত ধরো।প্রকৃত সুন্নত মানার জন্য যদি তুমি এই পোশাক পরে থাকো তাহলে তোমার জবান ও হাত হতে আর মুসলমান আঘাত প্রাপ্ত হবেনা,তুমি গীবত করতে পারোনা,তুমি পিছে দোষ খুজতে পারোনা,অপবাদ দিতে পারোনা।তোমার খটকা মনে হলে তার বাসায় চলেযাও,বা মোবাইলে তার সাথে কথা বলে সমাধান করো,জনসম্মুখে দোষ প্রচারের নাম ইসলাম ও সুন্নাত না এটা মোনাফেকী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন