ইসমতে আম্বিয়া,,আল্লামা মাওদুদী রহঃ প্রতি জুলুম,ইমাম আব্দুল হান্নান

আব্দুল হান্নান 

 নবীদের ভুল নিয়ে সৈয়দ আবুল আ'লা মওদূদী(রহঃ) ও উলামায়ে দেওবন্দের বক্তব্য!!

★আল্লামা মওদূদী'র বক্তব্যঃ

'এটি একটি সূক্ষ্ম রহস্য যে, মহান আল্লাহ তা'য়ালা ইচ্ছা করে প্রত্যেক নবী থেকে কোন না কোন সময় তাঁর হেফাজত উঠিয়ে নিয়ে দু'একটি ভূল ত্রুটি হতে দিয়েছেন যাতে মানুষ নবীদেরকে খোদা না বুঝে'।(তাফহীমাত ২/৪৩)!

★মাওলানা আশরাফ আলী থানবীর বক্তব্যঃ

'কোন কোন সময় নবীদের থেকে ভুল ত্রুটি হওয়ার যে ঘটনা সমূহ কুরআনে উল্লেখিত হয়েছে এগুলো প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর হেকমত ও রহমত।এর মধ্যে এক বড় ফায়দা এও যে, মানুষের মনে যেন নবীদের খোদা হওয়ার সন্দেহ না হয়'।(মাজালিসে হাকীমুল উম্মাতঃ মুফতী শফী, ৬৫ পৃষ্ঠা)!

প্রিয় পাঠক! আল্লামা মওদূদী আর মাওলানা থানবীর বক্তব্যের মাঝে কি অমিল পাওয়া গেছে? না, তবুও এই কারণে আল্লামা মওদূদী কাফের বলে। কিন্তু মাওলানা থানবী কাফের নন। দেওবনদের আকিদা,,,,

★উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা সুলাইমান নদভীর বক্তব্যঃ

'মানুষ হিসেবে তাদের থেকেও ভূল ত্রুটি হতে পারে।কিন্তু আল্লাহ তাঁর ওহীর দ্বারা এসমস্ত ভূল ত্রুটিরও সংশোধন করে থাকেন'।(সিরাতুন্নবী ৪/৭০)!

আল্লামা নদভীকে কিন্তু এই কথা বলার কারণে কেউ কাফের বা ভ্রান্ত বলেনা।কিন্তু মওদূদী বললেই..

★ফারায়েয শাস্ত্রের ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী'র বক্তব্যঃ'

আম্বিয়া কিরাম নবুয়্যাত প্রাপ্তির পর থেকে ইচ্ছাকৃত কবীরা ও সগীরা গুনাহ থেকে পবিত্র। কিন্তু ভূল বশতঃ কবীরা ও সগীরা গুনাহ হতে পারে'।(ইছমতে আম্বিয়া, ২৮ পৃষ্ঠা)!

'আদম (আঃ) অবাধ্য ছিলেন।আর অবাধ্য হওয়াকে আমরা কবীরা গুনাহ মনে করি'(ইছমতে আম্বিয়া, ৩৬ পৃষ্ঠা)!এই কথাটি আল্লামা মওদূদী বললে কেমন হত?

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকীদাঃ

'ভূল বশতঃ কবীরা গুনাহ হওয়ার ব্যপারে অধিকাংশ আলেমদের মত হলো তা জায়েয ও সম্ভব।এমনকি জমহুর উলামার মতে নবীদের থেকে ছগীরা গুনাহ ইচ্ছাকৃতও হতে পারে'।(কওমী ও আলীয়া মাদ্রাসায় পাঠ্য আকীদার কিতাব শরহে আকাঈদে নসফীঃইছমতে আম্বিয়া)!

ধৈর্যশীল পাঠক! চিন্তা করুন, মওদূদী বলেছেন ভুল হতে পারে!তাতেই তাঁকে ভ্রান্ত, কাফির ইত্যাদি বলা হয়।তাঁর বিরুদ্ধে একশ্রেণীর কওমী মূর্খ ও মিথ্যাবাদী আলেম অপবাদ দেয় তিনি নাকি নবীদেরকে নিস্পাপ মনে করেন নি!

তাদের দলিলঃ

উপরোল্লিখিত আল্লামা মওদূদীর বক্তব্য।অথচ যেসকল ইমামরা গুনাহ হতে পারে বলেছেন তাদেরকে কিছু বলা হয়না।এবার কি বুঝতে পেরেছেন সত্যটা? হোসাইন আহমাদ মাদানী মওদূদীর এই বক্তব্যের জন্য বলেছেন 'এবার বলুন জামায়াতে ইসলামী ও এর প্রতিষ্ঠাতা মুসলমান কিনা'?(মওদুদী দস্তর)!

এ থেকে বুঝা যায় মওদূদীর জ্ঞানের পরিধি হোসাইন মাদানীর চেয়ে কত বেশী ছিল!যারা এতদিন ভূলের মধ্য ছিলেন তারা কি সন্দেহমুক্ত হয়েছেন? নাকি জামায়াতে ইসলামী করাই তার একমাত্র অপরাধ?নাকি প্রাণের নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনকে পূর্ণাঙ্গ ভাবে অনুসরণ করার চেষ্টায় তার ভূল? নাকি অন্যান্য আলেমদের মত ইসলামের অর্ধেক মেনে নিয়ে অর্ধেক মেনে অর্ধেক মেনে না নিয়ে চলেন নি তাই তিনি বড় অপরাধী?

মন্তব্যঃ

আল্লামা মওদুদী (রহঃ) এর একমাত্র অপরাধ ছিল তিনি নিজেকে খানকার চার দেয়ালের মধ্যে আবদ্ধ রাখতে পারেননি বরং দ্বীন কায়েমের জন্য রাজপথে নেমে এসেছেন।তাই খানকা ওয়ালারা তার বিরুদ্ধে হাজারো বানোয়াট বই লিখেছে!!

সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদী রহঃ এর বিরুদ্ধ বিরোধিতার আরো একটি কারণ হচ্ছে মুসলমানদের জন্য আলাদা সার্বভৌমত্বের দাবী পাকিস্তান স্বাধীন এর পক্ষে যাবার জন্য হুসাইন আহমদ মাদানীর সাথে দ্বন্দ্ব। হুসাইন আহমদ মাদানী অখণ্ড ভারতের কংগ্রেসের পক্ষে কাজ করছিল তিনি চাচ্ছিলনা পাকিস্তান স্বাধীন হোক এবং মওদুদী রহঃ কে তিনি নির্দেশ দেন যে কংগ্রেসের পক্ষে পাকিস্তান স্বাধীন এর বিপক্ষে পত্রিকায় বিবৃতি দেবার জন্য, এই প্রস্তাব নাকোচ করে দিয়ে মওদুদী রহঃ দেওবন্দ থেকে বেরিয়ে আসেন।এর পরই হুসাইন আহমদ মাদানীর সমর্থকরা মওদুদী রহঃ এর বিরুদ্ধ বিভিন্ন অপপ্রচার চালাতে থাকে যা আজো বন্ধ হয়নি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

২০০কোটি টাকায় জামায়াতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে হেফাজত নেতা মুহিবাবুল্লাহ বাবু নগরীকে

গত কয়েকদিন হলো হেফাজত নেতা মুহিব্বুল্লাহ বাবু নগরী হঠাৎ জামায়াতের বিরুদ্ধে কোন ইস্যু ছাড়াই বক্তব্য দেয়া শুরু করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ...