অরন্যে গোয়েন্দাবাস,রচনায়ঃকবি আব্দুল হান্নান

অরন্যে গোয়েন্দাবাস

হান্নান

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সামরিক জয় পরাজয়ের ঘনঘাটা শেষেই শুরু হলো উভয় পক্ষের আত্ম বিশ্লেষন,কোন পক্ষের পরিক্পনায় কোথায় ভূল ছিল।যা হবার যা ঘটবার তাতো শেষ।ভবিষ্যতে যেন ভুল না হয় সেই পরিকল্পনা সামনে নিয়ে ধাবমান সামরিক জান্তারা।যুদ্ধে পরাজয়ের বড়কারন গুলোর মধ্যে গোয়েন্দা তথ্যের নির্ভুলতা ও সঠিক তথ্য সরবরাহ বড় একটি বিষয়।কোন একটি দেশ তাদের গোয়েন্দাগীরি উন্নত করার জন্য, তারা প্রথমে জনবল রিক্রুটিং শুরু করবে।কিছু কিছু জান্তা বললো,সামরিক বাহিনীর ভিতর থেকে বাছাই করা হোক,কেউ কেউ বললো না পাবলিক থেকে ভাল ভাল স্কলার নিয়োগ দেয়া হোক কিন্ত এখানে একজন অত্যান্ত বৃদ্ধ নাবিক ছিল, যে পদাতিক বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে যুদ্ধবন্দী হয়েছিল। পরে কৌশলে সে পালিয়ে আসে।তার একটা চোখ শত্রূ বাহিনী উঠিয়ে নিয়েছিল।সে বললো তোমরা কি আমার একটা প্রস্তাব রাখবে? তোমরা যে পরিকল্পনা করছো তা অনেক দেশেই বিদ্যমান পুরাতন।নুতন কিছু যদি করতে চাও তাহলে আমার প্রস্তাবে মনোযোগ দাও।,,,,চলবে অরন্যে গোয়েন্দাবাস-২ বৃদ্ধটি বললো,নিজের হাতে খাবার খেতে পারে দুই, তিন বছর বয়সের এমন কিছু ছেলেমেয়ে জোগাড় করো,আমি তাদের গোয়েন্দাগিরী শিখাবো,বৃদ্ধর প্রস্তাবে সকলে যেন কিংকর্তব্যবিমুড়।কোথায় পাবে এমন ছেলেমেয়ে? এই বয়সের কোন সন্তানকে কোন পিতামাতা কি ত্যাগ করতে পারে? হ্যাঁ একটি রাষ্ট্রকে মেরুদন্ড খাড়াকরে দাঁড়াতে হলে,এর চাইতেও ভয়ংকর পরিস্থিতির মোকাবেলা করার জন্য রাষ্ট্র সন্তানদের প্রস্তুত থাকতে হবে।রাষ্টের জন্য দিতে হবে।তাদের শক্তিশালী পরিচয়তো অবশ্যই থাকবে।যেমনেই হোক অনেকগুলো ছেলেমেয়ে জোগাড় করা হলো,অত্যান্ত নিরাপদে তাদেরকে রাখার কাজ চলছে,তাদেরকে রাখা হয়েছে শহরের এক আলিশান মঞ্জিলে যা প্রশিক্ষনের জন্য মোটেও নিরাপদ ছিলনা।বৃদ্ধ রাষ্ট্র শক্তির নিকট এদের আবাসস্থলের জন্য কিছু জমির আবেদন করলো,কিন্ত বৃদ্ধ জমিটা এমন জায়গায় নিল যেখানে জনমানব কেউতো যা ই না,নাম শুনলেও সাধারণ মানুষ ভয় পাই।,,, ,, চলবে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস-৩ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদীদের ধরে ধরে জীবন্ত কবর দিত যে উপত্যকায় তার পাশেই ছিল এই জংগলটি।মনে হয় উপত্যকা থেকে ইহুদীদের সেই প্রেতাত্মা এখনো জংগলের দিকে ধেবে আসে।কিন্ত একজন সনাতনী যোদ্ধা কিভাবে এখানে গোয়েন্দা ক্যাম্প স্থাপন করবে তা কারো বুঝে আসলোনা।তবে গোয়েন্দা প্রশিক্ষণেরর জন্য এটা আদর্শ একটা জায়গা।সরকার নুতন করে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ঐ এলাকায় কাজ শুরু করলো।চারিদিকে কাটাতারের ব্যাড়া, জনমানব তেi দূরের কথা সাধারণ সৈন্যরাও জানতনা ওখানে কি হতে যাচ্ছে।আর্মির কিছু নীতি নির্ধারক এবং পাবলিক কিছু নীতি নির্ধারক ব্যতিত দেশের আর কেউ জানতনা। চতুরদিকে বড় করে প্রাচীর দেয়া হলো।দেশীয় মিস্ত্রী নিয়োগ দেয়া হলো এই শর্তে যে,বৌ বাচছা সব নিয়ে এখানে থাকতে হবে খাবার সরকারী,বেতন সরকারী,কোথাও যাওয়া যাবেনা।ভিতরে এখন কি হবে?কেউ জানেনা। অরন্যে গোয়েন্দাবাস-৪ হিলারীর ছবি দিয়েই শুরু করতে হচ্ছে গোয়েন্দাবাসের ৪র্থ পর্ব।বৃদ্ধ অত্যান্ত চালাক সার্ভিলেন্স প্রকৃতির মানুষ।প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের পরিত্যাক্ত যত লাশ সবই এই উপত্যকায় ফেলা হতো।শকুন,কুকুর,শিয়ালেরা এখানে এসে পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারতো।ইতিহাসে বোম জাতীদের কুকুর খাওয়ার প্রমান পাওয়া যায়।কিন্ত বৃদ্ধের পদক্ষেপ দিন দিন নুতন নুতন তথ্যের দিকে আমাদের নিয়ে যাচ্ছে।বৃদ্ধ সব সময় ৫জনের খাবার বেশি আনতে বলে।সামরিক বাহিনীর খাবার কিন্ত হিসাবের।দু একদিন হইত দু একজনের বেশি নিলে সমস্যা নেই কিন্ত বৃদ্ধ প্রতিদিন ৫জনের খাবার বেশি আনবেই। আবার সবার খাবার শেষে বাকি খাবার গুলো নিয়ে দূরে জংগলের দিকে যায়।কোথায় যায়? কাকে খাবার গুলো দেই? বড়ই কৌতুহল জাগলো দেখার জন্য।বৃদ্ধ খুব চালাক,কারো সাথে নেইনা।অবশেষে জানা গেল জংগলের কুকুর গুলোকে এই খাবার গুলো দেই। অরন্যে গোয়েন্দাবাস-৫ পরে খোজ নিয়ে জানতে পারলাম বৃদ্ধ লোকটি পাংখুয়া জাতির।পাংখুয়ারা কুকুর খেতে ভালবাসে।সে জন্য সে কুকুর গুলোকে ভালবাসে ভবিষ্যতের জন্য।কিন্ত এই কুকুর গুলোতো মানুষ্যভোজী।তার কাছে তাতে কোন সমস্যা নেই।কুকুর হলেই হলো।বৃদ্ধর কাছে একবার তাদের প্রিয় খাবার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম,সে প্রথমে মৃদু হাসলেন এবং বললেন মশকারা করেন? আমি বললাম কেন? বৃদ্ধ ভেবেছিল আমি জানার পরেও আবার ওর কাছে জানতে চাচ্ছি।আসলে আমি জানতাম না।আমার আরো কৌতুহল বাড়লো।পরে আমাকে বললো শুন যেটা মোটা,তাজা,ভালমানের কুকুর আমরা ৩/৪ দিন যাবৎ বেঁধে রাখি।তার পর আলো চাউল পেট ভরে একবারে খাওয়াই।এবং সাথে সাথে লোহার রড মাটির সাথে গেড়ে চার পা ভাল করে বেঁধে চারিদিকে জ্বালানী সাজিয়ে আগুন ধরে পুড়ানো হয়।ঐ পুড়া কুকুরের পেটের ভিতর থেকে চাউল গুলো নাড়ীভুঁড়ি সহ প্রথমে বের করা হয়।পরে নাড়ীর ভিতর চাউল গুলো থাকা অবস্থায় আর একটু পোড়ানো হয়।এতে করে একটু পুড়পুড়ি ভাব হলে নাকি খুব মজাদার খাবার হয়। অরন্যে গোয়েন্দাবাস-৬ দুই বছরের মাথায় ভিতরে কোন রকম থাকার ব্যবস্থা হয়েছে।হঠাৎ একদিন রাতের বেলা ৪/৫ টা কালো মাইক্রোবাসে করে বাচ্চা গুলোকে এখানে স্থানান্তর করার কাজ শুরু হয়েছে।ওখানে রান্নাবাড়ার কাজ এবং বাচ্চাদের দেখভাল করতো ঠান্ডু আর ফুলকী ওরা দুজন স্বামী স্ত্রী।গরীব হলেও ওদের আবার মিল মহব্বত খুব ভালই ছিল।বাচ্চারা কোন জংগলে যাবে সেখানে পাংখুয়া বুড়া ব্যাটার কুত্তা খাওয়ার খবর শুনে ওরা যে আর ওখানে যাবেনা দারোয়ান ভজার কাছে তা প্রায় ই বলত।ভজা এ ঘটনা বুড়াকে কখনো বলেনি।বাচ্চা গুলো এসছে l এদের খাবার,দেখভাল এখন কে করবে? বৃদ্ধ ভজার উপর চরম চটে গেল।রাগ করে ভজাকে বলল তুই আাজ হতে রান্না করবি। অরন্যে গোয়েন্দাবাস-৭ ভজার ও মাথা গরম,ঠিক আছে রান্না বান্না যা করার আমি করবো গেটে ডিউটি করবে কে? আপনারই তো দেখি ডিউটি করার নাম্বার।বৃদ্ধ মুচকি হেসে বললো ওরে আমার লালচাঁদ সোনারে তোমার আর রান্নাকরা ও লাগবেনা ডিউটি করাও লাগবেনা।রান্না করার জন্য আমাদের কুক চলে আসছে,ডিউটির লোকও চলে আসছে। ভজা থোতর মোতর খেয়ে বৃদ্ধর পা ধরে স্যার আমাদের কি হবে? বৃদ্ধ জোর গলায় বললো,তোরাতো ভবিষ্যৎ এর চিন্তা করিসনা,মানুষকে মূল্যায়ন করিসনা,এখন পনের দিনের বেতন পাবি নিয়ে বাড়ী যা আর কি করবি।তোরা বিশ্বস্থতা অর্জন করতে জানিসনা।সত্যি সত্যিই কিছুক্ষণ পর হুম হুম করে কয়েকটি মিলিটারী বাস ও লরি চলে আসলো।লোকজন মাল সামান ভর্তি।মালসামান নামিয়ে কয়েকজন লোক আর একটা পিকআপ ভ্যান থেকে বাকী সবাই চলে গেল।ভজারতো চাকরী নেই,ভজা পাশেই আম গাছের নীচে এমন ভাবে বসে আছে যেন আসমান জমিন সব ওর মাথার উপর ভর করেছে।বৃদ্ধ দেখেও না দেখার ভান করে সামনের অফিসে বসে আছে।অন্যদিন ভজা এতক্ষন বাসায় চলে যায় আজ আম গাছের গোড়াই বসেই আছে।রাতের বেলা ডিউটিটা সরকারী লোক এসে করে শুধু দিনের জন্য গেট দারোগা হিসাবে ভজাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। অরন্যে গোয়েন্দাবাস-৮ ছেলেটাকে বললাম অরন্যে গোয়েন্দাবাসের অষ্টম কলামটা লেখার জন্য।ও বললো আববু আপনি কোন কল্পনা থেকে লিখছেন আমি তার ভিতর কেমনে যাবো? আর কি ভাবে লিখবো? আমি বললাম,তুই না সাহিত্যে অনার্স করছিস? তাহলে পারবিনা কেন? তুই না আমার সন্তান পিতার মনোভাব সন্তানকেতো বুঝতেই হবে।যাক সে জন্য একটু সময় ক্ষেপন হলো।খুব ভোর বেলায় ভজা চলে এসছে যদি চাকরীটা ফিরে পাওয়া যায়।ও মা সকালবেলা গেটের কাছে আসতেই নুতন দারোয়ান বাম হাত নীচের দিকে রেখে মনে হচ্ছে গোপনে তাড়াতাড়ি সরে যেতে বলছে।আর ভিতরে সরগোলের শব্দ।মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েছে।এর ফাঁকে ভজা কেমনে যেন বৃদ্ধকে রুমালে চোখ মুচতে দেখেছে।ভজার মনে কৌতুহল আরো বেড়ে গেল ঘটনা কি? ভজা আড়ে থেকে অবস্থা বোঝার চেষ্টা করছে।কিন্ত কোন মতেই কিছু বোঝা গেলনা,দারোয়ান ও কাছে ভিড়তে দিচ্ছেনা।অবশেষে জানা গেল বাচ্চা একটা মারা গেছে।ওখানকার সব বাচ্চাইতো ভজার চেনা কে মরলো? রাত দশটা পর্যন্ত ভজা জানার অনেক চেষ্টা করলো কিন্ত কাজ হলোনা,বৃদ্ধ বাহিরে আসলে না হয় জোর করে হলেও জানতাম,মনে সন্দেহ নিয়ে ভজা আবার বাড়ী ফিরে গেল। অরন্যে গোয়েন্দাবাস-৯ ভজা নাছোড় বান্দা না জানা পর্যন্ত দম নিবেনা।পরদিন সকালে আবার ক্যাম্পের পাশে হাজির।ভজার ঐ দিনের পর হতে বৃদ্ধর সাথে আর কোন সাক্ষাৎ হয়নি।ভজাকে দেখার পর বৃদ্ধ দৌড়ে এসে ভজাকে জড়িয়ে ধরে কাঁন্না শুরু করে দিল,আর বলতে লাগল ও আর নেই রে ও আর নেই।ভজার চোখ বেয়ে পানি পড়া শুরু হয়ে গেল।শহরের বাড়ীতে যখন বাচ্চা রিক্রুটিং এর কাজ চলছিল তখন মায়াবী একটি বাচ্চা ছিল।বাচ্চাটি একটু বড় ছিল এই জন্য মাঝে মাঝে গেটের কাছে চলে আসত।বৃদ্ধ ভিতর হতে দৌড়ে গেটে পৌছার আগেই বাচ্ছাটি ভজার নিকট চলে আসত,ভজাও কোলে তুলে নিয়ে আবার বৃদ্ধর কোলে দিয়ে দিত।প্রায় প্রায় ছেলেটির আসাতে ওর প্রতি ভজার একটা মায়া জন্মে যায়।এই জন্য ভজা আবার মাঝে মাঝে চকলেট নিয়ে যেত।চকলেট পেয়ে বাচ্চাটাও খুব খুশি হতো। অরন্যে গোয়েন্দাবাস-১০ ভজা আজ খুব ভোরেই এসছে,বৃদ্ধ প্রতিদিনের মত আজ সকালেও শরীর চর্চাতে বের হয়েই ভজার সাথে সাক্ষাৎ।বৃদ্ধর মনটা বেশি ভালো নয়।চোখের গোড়া গুলো লাল কি যেন বিষন্নতার মনোভাব নিয়ে ধীর কদমে হাটছে।ভজাকে দেখেই বৃদ্ধ কাছে ডাকলো,শোন আমি তোর কষ্টটা বুঝি যদিও আমি উপজাতী তারপরেও মানুষতো।শোন এখানে সবাই সরকারী লোকের কাজ কারবার,তাছাড়া বর্তমানে এটা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন জায়গা।এখানে সাধারণ মানুষের চলাচল আসা যাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। এখানে মাষ্টার রোলে দুজন ঝাড়ুদার,আর একজন মহিলা ধুপি নিয়োগ দেয়া হবে তুই একটা দরখাস্ত কর,আর শোন ঐ যে ঠান্ডু ফুলকী ওদেরকেও বল দরখাস্ত করার জন্য আমি ব্যবস্থা করে দেব। ভজার মনে আবার প্রাণ সÂvরিত হলো , ভজা কল্পনাও করতে পারেনাই বৃদ্ধ তার জন্য এটা করতে পারে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস-১১ ভজা প্রস্তাব নিয়ে ঠান্ডু,ফুলকীদের বাড়ী গেল।কিন্ত ফুলকী ঠান্ডু কেউ বাড়ীতে নেই।পাশের বাড়ীর একজনের নিকট জিজ্ঞাসা করে জানা গেল,ওরা এখন কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীর কাজ করে।সারাদিন রাস্তায় মাটি কেটে যা গম পাই তাই দিয়েই চলে যাচ্ছে ফুলকী ঠান্ডুর সংসার।ভজা পাশের বাড়ীর লোকের কাছে বলে আসলো সে সন্ধাবেলা ওদের সাথে সাক্ষাৎ করবে।রাস্তায় মাটি কাটতে গিয়ে ঠান্ডুর একটু পা কেটে গেছে। আজ একটু সকাল সকাল চলে এসছে।সারাদিনের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম সন্ধা আসলেই শরীর একেবারে নেতিয়ে পড়ে।ঠান্ডুর চোখে ঘুম ঘুম ভাব খেজুরের পাটির উপর শুয়ে আছে।ফুলকী রাতের রান্না করছে।বিকালবেলা কাজ থেকে আসতেই নিকিরেদের কাছে কাছ থেকে একপোয়া পুটিমাছ নিয়েছে ও গুলো কুটে বেছে রান্না করছে। এরই মাঝে ভজা হাজির,ভজাকে দেখে ফুলকী আনন্দে আত্ম হারা। অরন্যে গোয়েন্দাবাস-১২ শহর থেকে যাবার পর আর দেখা হয়নি।পুরাতন পরিচিত মানুষের সাথে সাক্ষাৎ হলে এমনিতেই ভালো লাগে।ফুলকী ঠান্ডুকে ডেকে দিল এই দেখ কে এসছে,আমাদের ভজা ভাই।রাতে যা হলো তাই দিয়েই মেহমানদারী হলো।ভজা অবশ্য বেশি সময় থাকতে চাইনি কিন্ত ওরা রাতের খাবার না খেয়ে আসতে দিবেনা।আসলে বাংগালী গরীবদের আদর্শই এটা,বাড়ীতে যেই আসুক খালী মুখে ফেরৎ দেইনা।ডিজিটাল দুনিয়া আসার পর অবশ্য এগুলো এখন কম বাড়ীতেই করা হয়।খাবার শেষে ভজা বললো,ঠান্ডু ভাই আমি তোমাদের জন্য একটা প্রস্তাব নিয়ে এসছি।তুমি আমার সাথে ঝাড়ুদারের কাজ করবা আর ফুলকী ধোপার কাজ করবে।ঠান্ডু একটু দম ধরে বললো তা কোথায়? ঐ যে বুড়ার বন বাড়ীতে ওটা এখন সরকারী হয়ে গেছে। ফুলকী পাশেই ছিল ও বলে উঠলো ও ভজা ভাই আমরাতো আসতে চাইনি কিন্তু ঐ পাংখুয়া ব্যাটার কুত্তা খাওয়ার ডরে না আমরা যায়নি।ভজা বললো আরে তার কুত্তা খাওয়াই আমাদের কি আসে যায়? অবশেষে ঠান্ডু বিষয়টা ভজার উপর ছেড়ে দিল।ভজা পরের দিন বৃদ্ধর কাছে হাজির।বৃদ্ধকে বিস্তারিত জানিয়ে দিল যে, তারা চাকুরী করবে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস-১৩ বনবাড়ীতে আবার নুতন করে চাকুরী শুরু হলো।চাকুরীর ধরন ও ভিন্ন খাবার দাবারের মান ও ভালো তবে এখানে এখন নিয়োম কানুনের অভাব নেই।খুব সাবধানে চলা লাগে। পায়ে পায়ে সরকারী লোকেদের খালী নিষেধাজ্ঞা, এটা করা যাবেনা ওটা করা যাবেনা,এই সময় করা যাবেনা আসা যাবেনা ইত্যাদী।ভিতরে বড় বড় তিনটি একতলা বিল্ডিং প্রত্যেক বিল্ডিংয়ে ত্রিশ জন করে বাচ্চা আর তিনটি করে সেকশন। ওদের শিক্ষা দিক্ষা দেবার জন্য তিন জন মহিলা দুইজন পুরুষ সব সময় নিয়োজিত থাকে। জানা গেছে এরা দেশের সর্বোচ্চ মেধাধারী ব্যক্তি।এরা বিভিন্ন দেশে গোয়েন্দা প্রশিক্ষন নিয়েছে এবং গোয়েন্দা প্রশিক্ষনে যারা স্কলার হয়েছে একমাত্র তারাই এখানে নিয়োজিত হয়েছে।বাচ্চাদের দেখা শুনার জন্য প্রত্যেকটা সেকশনে দুইজন করে মাতৃ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মহিলা নিয়োজিত আছে যারা সব সময় বাচ্চাদের আদর যত্ন করতে থাকে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস -১৪ জীবন বড়ই কঠিন, কখনো কখনো সহজ মনে হলেও পরক্ষনেই যেন আঁধার এসে ঝাপটে ধরে। মনে হয় জীবনের আর নিস্তার নেই।আবার কোন সে অলক্ষে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে আসে।বিপদের সময় যেটাকে বড় বড় ক্ষমতাধর তদবির দ্বারা স্বাভাবিক করতে হিমসিম খেতে হয়, আল্লাহ সময় দ্বারা সেটাকে স্বাভাবিক করে দেন।ভজার উপর যে বিপদকাল নেমে এসছিল তা স্বাভাবিক ছিলনা,আবার এত সহজে ভজা, ফুলকী ঠান্ডু চাকরি পেয়ে যাবে এটাও সহজ ব্যাপার না।তবে বিধাতা যদি চান কোন একটা অসিলার মাধ্যম দিয়ে জটিলকে সহজ করে দেন।যাক আমাদের গল্পের ভিতর কথা না বাড়িয়ে আমরা মূল ঘটনার দিকে যায়।বাচ্চাদেরকে কেন এভাবে গোয়েন্দা প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে? এর সুফল বা লাভ কি? একটি দেশের জন্য এটি কি সুফল বয়ে আনবে? হ্যাঁ এটা ৪০ বছর অগ্রিম চিন্তা ভাবনা যা আরো দুই শত বছর দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।বিশ্বেরর উন্নয়ন শীল রাষ্ট্র গুলো এখন সর্বনিম্ন ৫০০ বছর অগ্রিম পরিকল্পনা করে।এরই ধারা বকহিকতায় এগিয়ে যাচ্ছে বৃদ্ধের কার্যক্রম। অরন্যে গোয়েন্দাবাস -১৫ এখানে বাচ্চাদের এখন মানুষিক বিকাশের প্রশিক্ষণ চলছে।প্রশিক্ষক গন আসলেও অনেক আন্তরিক।তাদের যোগ্যতা মোতাবেক সম্মানী এমন এটা বেশি না।সাধারণ স্কুল কলেজের শিক্ষকদের শিক্ষকতার পাশাপাশি যেমন টিউশন,কোচিং ইত্যাদির মাধ্যমে টাকা ইনকামের যে ধান্দা এটা এদের মধ্যে নেই। মানুষিক বিকাশের পাশা পাশী তাদের দেশের প্রতি ভালবাসা,মমত্ববোধের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।তবে এই সমস্ত বাচ্ছাদের কাউকেই গোয়েন্দা তৈরী করা হবেনা এরা হবে গোয়েন্দাদের পিতা মাতা।এদেরকে মেধার ভিত্তিতে বিভিন্ন সেক্টরে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।এদেরকে অনুপ্রবেশ করানো হবে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন সেক্টরে।পরে এরা ঐ দেশের নাগরিক যাতে হতে পারে তার সব ব্যবস্থা করা হবে।আর এভাবেই এদের প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হবে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস -১৬ দেখতে দেখতে অনেকদিন অতিবাহিত হতে চললো।গোয়েন্দাবাসের বাচ্চারা এখন বেশ বড় হয়ে উঠেছে।দেশপ্রেমের কোন ঘাটতি তাদের মধ্যে নেই।তারা সবাই এখন জানে যে,তারা রাষ্টের বড় একটা সম্পদ।গোয়েন্দাবাসে কোন প্রকার সুযোগ সুবিধার অভাব নেই।তাদেররকে যে কোন একটি রাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করে সেখানে যে ভাবেই হোক আস্তানা গাড়তে হবে।এই অভিযানে সবাই সফল নাও হতে পারে।অনেকেই ধরাপড়ে পাঠার বলিও হতে পারে।তবে প্রত্যেকের সাথে এমন একটি ঔষধ দেয়া আছে যা ধরা পড়ার সাথে সাথে তারা গিলে ফেললে সর্বোচ্চ দুই মিনিট পরে মারা যাবে।কোন প্রকার তথ্য শত্রু দেশকে দেয়া লাগবেনা।আর এভাবেই এদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।ওদের ব্যারাকে এসবের আবার রিতিমতো ডামীর সাহায্যে মহড়া অভিনয় ও করা হয়।ফুলকীর কাজটা খারাপনা কোনমতে ঝাড়ুটা দিতে পারলে হয়েছে একেবারে রিতা ম্যাডামের রুমে।ফুলকীর দৃষ্টি শক্তি নাকি খুব ভালো তাই ওর দিয়ে রিতা ম্যাডাম প্রায় প্রায় মাথার উকুন দেখায়।ফুলকী উকুন দেখে আর ম্যাডাম গোয়েন্দাদের গল্প বলতে থাকে।ফুলকীর যেন এটা একটা নিশাই পরিনত হয়ে অরন্যে গোয়েন্দাবাস১৭ হঠাৎ পাশেই কেমন যেন চিল্লাপাল্লার আওয়াজ,রিতা ম্যাডাম ও ফুলকী তাড়াতাড়ি উঠে বাহিরের দিকে নামতেই ভজা দৌড়ে এসে একেবারে টানা টানা নি:শ্বাসে বললো মুরুব্বীতো জ্বরে কাঁপছে, ডাক্তারের কাছে নেয়া প্রয়োজন।নিজেদের এসি এ্যাম্বুলেন্সে করে ডাক্তারের কাছে নেয়া হলো,বিকালবেলা ডাক্তার মশাই হাসপাতালে নেই ডিউটি রেখে কোথায় যেন গেছে,গোয়েন্দা দেখে কোথায় গেছে প্রথমে ওরা বলতে চায়নি।পরে জানা গেল উনি ডায়বেটিসের রোগী প্রতিদিন সকাল বিকাল জগিং করেন।জরুরী ফোন করে নিয়ে আসা হলো,কমপাউন্ডারটা ছিল থুব বজ্জাৎ প্রকৃতির আর সব সময় বেশি কথা্ বলে।বৃদ্ধর সাথে এসছিল উনার সহকর্মী ওয়ারেন্ট অফিসার মার্গার ও ভজা।কমপাউন্ডারের বেশি কথা বলা দেখে মার্গার খুব চেতে গেলেন,ধমক দিয়ে বললেন এই তুমি কি ডাক্তার? এত বেশি কথা কেন বলো? হঠাৎ ডাক্তার মেজর তান্ডুয়ার আগমন, গেমস ড্রেস একদম ঘামে ভিজে শেষ।পরীক্ষা নিরিক্ষা করে জানা গেল বৃদ্ধর টাইফয়েড হয়েছে।গোয়েন্দাবাসের সবাই চিন্তিত,না জানি কি হয় বয়স্ক মানুষ আপনজন বলতে এখানে তার কেউ নেই।হাসপাতালে ভজাই দেখাশুনা করে।সারাদিন থাকে রাত দশটার সময় বাসাই চলে যায়।বৃদ্ধ আবার হাসপাতালের খানা খেতে পারেননা,তার উপরে আবার টাইফয়েড।গোয়েন্দাবাসের কাজকর্ম থেমে নেই।ওদের প্রত্যেকের শরীরের ভিতর বিভিন্ন জায়গায় ডিভাইস সেট করা হচ্ছে যাতে ওরা যেখানেই যাক ওদের গতিবিধি সনাক্ত এবং ওয়েভের মাধ্যমে ওদেরকে নিয়ন্ত্রন করা যায়। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ১৮ ওদেরকে স্কলার দিয়ে বিভিন্ন দেশে পাঠানো হবে,সামনে ওদের মাধ্যমিক পরিক্ষা স্কলার হিসাবে পাঠানোর জন্য রাষ্টকে আরো দুবছর অপেক্ষা করতে হবে।সামনের দুবছর পর যাতে সবার স্কলারের ব্যবস্থা করা হয় সে জন্য কতৃপক্ষ বোর্ডের সাথে সমন্বয় করছে।যে সমস্ত ছাত্রদের ডিভাইস লাগানো হয়েছে তাদের অধিকাংশই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এগুলো শরীরে স্থাপন করা খুবই সহজ,বের করা অনেক কঠিন,এটি স্থায়ী একটি ডিভাইস।অপারেশন করে বের করতে হবে।চারিদিকে হুলুস থুলুস বেধে গেল কিভাবে এমন হলো?তদন্ত আদালত শুরু হলো জানা গেল পার্শবর্তী রাষ্টের গোয়েন্দারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হবার পর আমদানী কারক দেশের মাফিয়া চক্রের সাথে যোগাযোগ করে ঐ সমস্ত ডিভাইসের ভিতর বিষাক্ত কিছুর অনুপ্রবেশ ঘটায় যাতে ওটা যে শরীরে থাকবে সে আস্তে আস্তে অসুস্থ হয়ে মারা যাবে।কতৃপক্ষ খুব তাড়াতাড়ি ডিভাইস গুলো বাচ্চাদের শরীর থেকে অপারেশন করে বের করা ফেললো।বুঝাগেল গোয়েন্দাবাস নিরাপদ না।এখানে শত্রুর গুপ্তচরের অনুপ্রবেশ অনুপ্রবেশ ঘটেছে।সাধারণ সবার আংগুল এখন ভজা আর ফুলকীর দিকে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস১৯ ফুলকীকে বন্দী করা হলো,হাসপাতালে ভজাকে ধরার জন্য গাড়ী পাঠানো হয়েছে।বৃদ্ধ হাসপাতাল হতে রিলিস হয়েছে ভজা উনার সাথেই আছে একজন সার্জেন্ট গিয়ে বৃদ্ধকে ঘটনাটি বললো বৃদ্ধ শুধু বললো,আমি সমস্ত কিছু ক্যাম্পে গিয়ে শুনবো এখন তাড়া আছে, আমি ঔষধটা উঠিয়ে আনি তোমরা একটু অপেক্ষা করো।বৃদ্ধ হাই কমান্ডের সাথে কথা বললো,যাদেরকে সন্দেহ করা হচ্ছে আসলে বিষয়টি তাদের দ্বারা করা সম্ভব না।সমস্ত প্রশিক্ষক,শিক্ষক শিক্ষিকাকে ক্লোজড করা হলো এবং সবার আলাদা আলাদা জবানবন্দী নেয়া হলো এবং নারী পুরুষদের আলাদা কক্ষ করে সেখানে রাখা হলো।সবার রুম তল্লাশী করে সমস্ত মোবাইল ফোন কতৃপক্ষের নিয়ন্ত্রনে নেয়া হলো। প্রত্যেকটা ফোনের কল হিষ্টরী নিয়ে যানা গেল একাজ কে করেছে।স্কুলের হেড মাষ্টার মহাশয়,গ্রেফতার করা হলো, কি কারণে তিনি এমনটি করলেন? কতৃপক্ষ কোন কিছুর অভাবতো রাখেন নাই।ইন্টারগেশন সেলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে যানা যায় নিরুপায় হয়ে হেডমাষ্টার এ কাজটি করেছে,তার একটি ছেলে সিটিজেনশীপ নিয়ে পার্শবর্তী দেশে পরিবার পরিজন সহ থাকেন।তার একটি ছেলে আছে পাঁচ বছর বয়স,ঐ দেশের মাফিয়ারা অপহরণ করে একাজটি করিয়েছে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস২০ ঐ দেশের মাফিয়াদের একটা গুন ভালো তারা দেশের জন্য কাজ করে।যখন কোন ,গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সরকারের নজরে না আসে তখন সেটাকে মাফিয়া চক্রটা হস্তক্ষেপ করে এবং এইটার স্বপক্ষে প্রমান দাড় করিয়ে সরকারের নিকট হতে পুরা সুযোগ সুবিধা গ্রহন করে। এটা ঐ দেশের সংবিধান,সরকারী কোন সংস্থা যদি তাদের কাজটা তারা করতে ব্যর্থ হয়, তবে সাধারণ জনগনের যে কেউ সেই কাজটি করতে পারে এবং সরকারের নিকট হতে পূর্ণ সুবিধা গ্রহন করতে পারে।সরকারের ঐ সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত যারা ছিল তাদের সুয়োগ সুবিধা কর্তন করে ঐটা পাবলিক যারা করে তাদেরকে প্রদান করা হয়।এটা ঐ দেশের খুব ভালো একটা দিক,এতে দেশ এবং জাতী উন্নত হবে।মানুষের মাঝে দায়িত্ববোধ বাড়বে,মানুষ কাজে ফাঁকী দিবেনা এবং কাজের প্রতি সবার আগ্রহ বাড়বে।যেটা হবার সেটাতো হয়ে গেছে এখন নুতন করে পথ চলতে হবে কারো জন্য থেমে থাকবেনা রাষ্ট্রের উন্নয়নের গতি।কুটনীতিক ভাবে হেড মাষ্টারের নাতীকে মুক্ত করা হলো এবং হেড মাষ্টারকে চাকুরী হতে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হলো। অরন্যে গোয়েন্দাবাস২১ বৃদ্ধ সরকারের নিকট নিজেস্ব প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রস্তাব করলো।দেশীয় তৈরি ডিভাইস প্রস্তুতের একটা সী মাবদ্ধতা থেকেই যাচ্ছে, তারপরেও রাষ্ট্রশক্তি বলে কথা যেমনেই হোক হবেই।চেষ্টা কখনো বৃথা যায়না সত্যি সত্যিই আগের চাইতে অনেক উন্নতমানের ডিভাইস নিজের রাষ্টের ইঞ্জিনিয়াররা তৈরী করে ফেললো,এটা অবশ্য বৃদ্ধরই অবদান বলতে হবে।সরকার যখন ব্যর্থপ্রায় ঠিক তখনি বৃদ্ধ ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভারসিটিতে চলে গেলেন।চীফ ইঞ্জিনিয়ার এর সাথে আলোচনায় বসলেন,চীফ ইঞ্জিনিয়ার প্রথমত বৃদ্ধকে মূল্যায়ন করতে চাইনি তিনি জানতেন উনি সাধারণ মানের কোন গোয়েন্দা।বৃদ্ধ খুব মার্জিতভাবে বিষয়টি চীফ ইঞ্জিনিয়ারকে বুঝালেন,পরিশেষে দেশীয় ইঞ্জিনিয়াররা সময় নিয়ে শরীরের যাতে কোন ক্ষতি না হয় এবং আরো উন্নত করে ডিভাইস তৈরী করলো।ডিভাইস পরীক্ষামূলক প্রত্যেকের শরীরে লাগানো হলো পর্যবেক্ষনে রাখা হলো কারো কোন সমস্যা হয় কিনা। অরন্যে গোযেন্দাবাস ২২ শরীরে ডিভাইস লাগিয়ে সবাই স্বাভাবিক, কারো কোন সমস্যা নেই।এখন কিভাবে নিয়ন্ত্রন করা হবে সেই পরিক্ষা নিরিক্ষার জন্য ব্যস্ত গোয়েন্দাবাস।এটা স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত ডিভাইস, কোন মতে একবার স্যাটেলাইট আকর্ষণ পেলে ২৪ ঘন্টা দুর হতে যেকোনো রিএ্যাক্ট নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব।যদি এমন মনে হয় যে ওকে মেরে ফেলতে হবে তবে কন্ট্রোলরূম হতেই সেটা সম্ভব।জোর প্রশিক্ষণ এখন কন্ট্রোলারদের,তার উপর তাদের উপর রাষ্ট্রের বিশ্বাসের প্রশ্ন এখনো শেষ হয়নি।এমন লোক এখানে নিয়োগ দিতে হবে যাদের কোন পিছুটান থাকবেনা।লোভ এবং কুবুদ্ধি মাথায় আসতে পারে এমন লোকের নিয়োগ এখানে হবেনা।রাজনৈতিক প্রহন ,সন্ত্রাসী বা কোন জংগী গোষ্ঠী কতৃক জিম্মি হতে পারে এমন লোককে এখানে নিয়োগ দেয়া যাবেনা।রাষ্ট্রের প্রতি যাদের ভালবাসা ও প্রশ্নাতীত আনুগত্য আছে একমাত্র তাদেরকেই এখানে নিয়োগ দিতে হবে। অরন্যে গোযেন্দাবাস ২৩ অত্যান্ত কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের।রাজনৈতিক হাতছানি পিছু ছাড়ছেনা নিয়োগের ক্ষেত্রে। এমপি মন্ত্রীদের ফোনে অতিষ্ঠ নিয়োগ কর্মকর্তারা।ঘটনাটি বৃদ্ধর কর্নগোচর হলে বৃদ্ধ সরাসরি প্রধান মন্ত্রীর স্বরনাপন্ন হলেন।প্রধানমন্ত্রী শতভাগ নিরপেক্ষতা নিয়ে কাজ করার জন্য বৃদ্ধকে দায়িত্ব দিলেন এবং কারো ফোনের তোয়াক্কা করতে নিষেধ করলেন।বৃদ্ধ এমন কিছু লোক নির্বাচন করলো যাদের কোন পিছুটান নেই। তবে রাষ্ট্রের প্রতি কেমন ভালবাসা আর আনুগত্য এখন এই পরিক্ষায় এদের উন্নিত হতে হবে।শুরু হলো এদের প্রশিক্ষণ। কোন প্রকার ত্রুটি মার্জনা করা হবেনা।বৃদ্ধ নিজেই এদের প্রশিক্ষক।প্রকৃত জনবলের পাঁচগুন বেশি লোকের নিয়োগ দেয়া হলো।এখানে শাররীক,মানুষিক, ত্বাত্মিক সব ধরনের প্রশিক্ষনের উপর পরীক্ষা দিয়ে পাশ করতে হবে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ২৪ ২৫ জনের একটি বুদ্ধিদিপ্ত দল প্রশিক্ষন নিতে শুরু করলো প্রশিক্ষনের প্রথম সপ্তাহই পাঁচ জন আউট।প্রশিক্ষনার্থীরা এর গুরুত্ব ভাল বুঝতে পারে নাই,তারা কল্পনা ও করতে পারে নাই যে এই প্রশিক্ষনের গুরুত্ব এত কঠিন।সকলেই হুশিয়ার হয়ে গেল।পান থেকে চুন খসার উপাই নেই,নানা রকমে তাদের সততা, আনুগত্য আর দেশপ্রেমের পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে, ২৪ সপ্তাহের প্রশিক্ষনে ১০ জন টিকলো বাকী সব বহিস্কার।এখন এদেরকে দেয়া হবে আসল প্রশিক্ষন। ডিভাইস প্রশিক্ষনে এদেরকে পারদর্শী করে তোলা হলো। প্রথম পরীক্ষা চললো কুকুরের উপর,বেশ কয়েকটি কুকুর নিয়ে এসে তাদের শরীরে ডিভাইস সেট করা হলো এবং বেশ কিছুদিন তাদেরকে ক্যাম্পে বন্দী অবস্থায় রাখা হলো।এই কুকুরগুলো ছিল সাধারণ কুকুর। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ২৫ কুকুরগুলোকে ভালো ভালো খাবার দেয়া হলো এবং বাউন্ডারির ভিতরে রেখেই তাদের উপর পরীক্ষা নিরিক্ষা চালানো হচ্ছে।নিজেস্ব বাউন্ডারি পেরিয়ে এবার কুকুর কয়েকটিকে গাড়িতে করে একটু দূরে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা চালানো হলো তাতেও সফলভাবে কাজ সম্পন্ন হলো।এর ভিতর কুকুর চারটি শেষ,আর দুটি কুকুর আছে ।বৃদ্ধ কুকুর দুটিকে নিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকা যেটা সব চাইতে দূরে সেখানে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা চালানোর জন্য বললেন।এতেও সফল পরীক্ষা চললো। এখন পরীকল্পনা বিদেশে কুকুর নিয়ে তার উপর পরীক্ষা চালাতে হবে।টাম নামের বিদেশী কুকুর একটা নেয়া হলো,তাঁকে বেশ কিছুদিন প্রশিক্ষন দেয়া হলো।কুকুরের শরীরের ভিতর এমনভাবে ডিভাইস সেট করা হলো যাতে স্ক্যানার মেশিনে কোন প্রকার ধরা না যায়।কুকুর সহকারে বিদেশ ভ্রমনে যাবার জন্য একজনকে নির্ধারণ করা হলো এবং বিদেশে যাবার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হলো। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ২৬ কুকুর সহকারে বিদেশ ভ্রমন বড় একটা সমস্যা,তবে টামকে টয়লেটের অভ্যাস করানো হয়েছে এই জন্য বেশি একটা সমস্যা হয়নি।এদিকে কন্ট্রোল রুম হতে সার্বক্ষণিক এদেরকে ভালোভাবেই পর্যবেক্ষন করা সম্ভব হচ্ছে।কুকুর নিয়ে বিমানে ভ্রমন খুবই জটিলতা,হাইকমিশনের সাথে যোগাযোগ করে সব ব্যবস্থা পাকাপোক্ত হলেও বিমানে নিরাপত্তার সমস্যা কথা কর্তৃপক্ষকে বেশি চিন্তিত করছে।নিজেদের দেশের বিমান ঐ ভাবেই যোগাযোগ করা হয়েছে।ওয়ারেন্ট অফিসার রবার্ট ডি টামের সাথে থাকতে থাকতে ওর সাথে সম্পর্কটাও ভাল কিন্ত ওকেতো হারাতেই হবে।কিছু করার নেই দেশের সার্থে কারো না কারোতো বলির পাঠা হতেই হবে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ২৭ রবার্ট ডি টামকে নিয়ে বিমান বন্দরে,হঠাৎ টাম ঘেউ ঘেউ শুরু করেছে একজনের দিকে ছুটে যেতে চাচ্ছে ।ওকে প্রাথমিক পর্যায়ে বিয়ারের প্রশিক্ষন দেয়া হয়েছিল,আর ওখান দিয়ে একজন বিয়ার নিয়ে যাচ্ছিল এই জন্য ও ঘেউ ঘেউ করছিল।যথা সময় বিমান আসলো রবার্ট ডি টামকে নিয়ে বিমানে উঠলো এবং নির্ধারিত সীটে বসলো।টামকেও সীটবেল বেঁধে দেয়া হলো।অপারেটররা কন্ট্রোল রূমে ডিভাইস ডিসটেন্স পাওয়ার পরীক্ষা করে দেখছে,আনলিমিটেড ডিসটেন্স।রবার্ট ডি বিমান হতে সিড়ি বেয়ে নামতেই কাজ করা হলো,রবার্ট এর হাত হতে টাম আছাড় খেয়ে মাটিতে পড়ে গেল।রবার্ট ডি টামের শরীর হতে দ্রুত ডভিাইসটি খুলে নিল।রবার্ট ডি টাম মরায় কাঁন্নার অভিনয় করলেও চোখের কোনের পানিটা কিন্ত অভিনয় ছিলনা।এদিকে কন্ট্রোলরূমে আনন্দের সীমা নেই,অনেকদিন পর সফল হয়েছে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস২৮ এখন শুরু হবে ইন্টার মিশন,প্রত্যেকটা পার্শবর্তী দেশের নিজেস্ব হাইকমিশন এবং কুটনীতিকদের সাথে পরামর্শ করা হলো। হাইকমিশনের অধীনে তৃতীয় শ্রেনীর গোয়েন্দাদেরকে প্রকৃত গোয়েন্দাদের সাপোর্ট দেবার জন্য স্বামী স্ত্রী সাজিয়ে একটি দলকে ঐ দেশে পাঠানো হবে।গোয়েন্দা তথ্যের নিরাপত্তার জন্য পেশাদার স্নাইপারদেরকেও অনুপ্রবেশ করানো হবে। ।পার্শবর্তী রাষ্ট্র সমুহে এম-১ (মিশন১)নামের স্কুল খোলা হলো,শর্ত হলো ঐ স্কুলের ব্যায়ভার মিশনারীরা বহণ করবে এবং তাদের প্রতিনিধিরা ওখানে নিয়ন্ত্রন করবে।তৃতীয় শ্রেনীর গোয়েন্দা যুবক যুবতীদের জোড়া জোড়া স্বামী স্ত্রী বানিয়ে পাঠানো হলো পার্শবর্তী দেশ সমুহে,সাথে স্নাইপারদের ও। এ দেশে এসছে কর্ণ আর প্রিয়সী ,কর্ণ মিশনের প্রধান নির্বাহী আর প্রিয়সী প্রধান শিক্ষিকা কোন এক সময় এদেরকে কেন্দ্র করে আসবে আসল গোয়েন্দা।তবে কর্ণ আর প্রিয়সী এদের প্রাথমিক কাজ হচ্ছে স্কুলের ত্বত্তাবধান করা আর হত দরিদ্র ব্রিলিয়ান ছাত্রদের টার্গেট করা এবং টাকার বিনিময়ে তাদরেকে এজেন্ট বানানো এবং মূল গোয়েন্দাদের জন্য একটা পরিবেশ তৈরী করা।টার্গেট বেশ ভালই সফল এদের প্রাথমিক কাজ দেশের প্রতিরক্ষা বিভাগের লোকদের সাথে সম্পর্ক করে তথ্য সংগ্রহ করা।এজেন্টদের ভিতর এমন কিছু গুরুত্বপূর্ন এজেন্ট আছে যারা পেশাদার কিলার।যখন কোন সাধারণ এজেন্ট ধরা পড়ে তখন এই কিলাররা যে কোন উপায়ে তাঁকে হত্যা করবেই। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ২৯ একজন সাধারণ এজেন্ট ছুটিতে থাকা একজন সামরিক ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক করতে গিয়ে সন্দেহের চোখে ধরা খেয়েছে,পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে কিন্ত রক্ষা করে থানা পর্যন্ত কি নিয়ে যেতে পারবে?না আর সম্ভব হলোনা পেশাদার কিলার স্কোয়াডরা স্নাইপার সহ প্রস্তুত এবং নিশানাভেদী স্যুটিং এর কবলে লোকাল এজেন্টের মৃত্যু, হতাশ পুলিশ কুল কিনারা খোজা শুরু হলো কাদের সাথে ওর চলাচল ছিল এখন খুজাখুজি তাদের উপর।মিশন ১ এর প্রথম মৃত্যু।পুলিশের হেফাযতে এ রকম সন্দেহভাজন একজন ব্যক্তির মৃত্য স্বাভাবিকভাবে অনাকাংখিত এবং প্রশাসনকে ভাবিয়ে তোলার একটি বিষয়।প্রশাসনে সন্দেহের ঘনঘাটাটা এখন একটু বেশি শুরু হলো।বন্ধুবান্ধব যা আছে সব ধরপাকড় শুরু আর অন্যদিকে মিশনের লোকেরা অত্যান্ত সতর্কতার সাথে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৩০ কর্ণ ,প্রিয়সী সবচাইতে বেশি চিন্তিত,তাদের মূল প্রচেষ্টা ঘটনা যেন কোন প্রকারেই প্রকাশ না পাই। হাইকমান্ডের নির্দেশনা মোতাবেক স্কুলে একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হবে এবং রাষ্টের এমপি,মন্ত্রি,পুলিশ প্রধান সহ গন্যমান্য ব্যক্তিদের দাওয়াত করা হলো। দেশ হতে নাম করা সব নায়ক,নায়িকাদের অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহনের কথা বলা হলো।সন্দেহের আংগুল যাতে কোন প্রকার না ওঠে তার জন্য যা যা করার সব কিছুরই পরিকল্পনা করা হলো।যথা সময় অনুষ্ঠান শুরু হবে।দলে দলে মেহমানরা আসছে,হাইকমিশনের লোকের সাথে কর্ন এবংপ্রিয়সীও আছে রিসিভশনে।এমপি মন্ত্রিদের ছেলেমেয়েরাও আসছে।এক মন্ত্রির ছেলের ললুপ দৃষ্টি প্রিয়সীর দিকে একধাপ সামনে এগিয়ে হাত বাড়িয়ে হাই হ্যালো।প্রিয়সী সংকোচ বোধ করে হ্যালো। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৩১ যথা সময়ে অনুষ্ঠান শুরু হলো,মন্ত্রীর ছেলের দৃষ্টি প্রিয়সীর দিকে,সে উঠে এসে প্রিয়সীর কাছে সোফায় বসলো।প্রিয়সীতো বিরক্তবোধ করছেই সাথে কর্নও,এক পর্যায়ে প্রিয়সী কর্ণ দুজন উঠে বিশেষ রূমে গিয়ে পরামর্শ কি করা যায়? অবশেষে সিদ্ধান্ত হলো প্রিয়সী ওর সাথে প্রেমের অভিনয় করে ওকে শায়েস্তা করতে হবে।ফিরে এসে আবার পাসেই বসলো,আস্তে করে প্রিয়সী ওর ফোন নাম্বারটা চাইলো এবং বললো অনুষ্ঠান শেষে কথা বলবো।মন্ত্রীর ছেলে অনেক খুশি নাম্বারটা দিয়ে দিল।অনুষ্ঠান শেষ হাই হ্যালো বলে বিদায় জানালো। কিভাবে শায়েস্তা করা যায়? দুজনে পরামর্শ করলো।সিদ্ধান্ত হলো ওকে নির্জন এক জায়গায় নিয়ে স্নাইপারদের দ্বারা স্যুট করা। নুতন একটা মোবাইল ফোন আর একটা সীম নিয়ে প্রিয়সী কথা বলা শুরু করলো।ইন্টার মিশন শুরু হলো, কিন্ত হজম কি করা যাবে? প্রিয়সী ছদ্দবেশ ধারন করলো,পুরুষের পোশাক পরে মাথায় হ্যাট লাগিয়ে ভাড়া টেক্সিক্যাবে উঠে মন্ত্রীর ছেলেকে ফোন করে নির্ধারিত জায়গায় নিয়ে আসলো।গল্পের জমজমাট আসর,স্নাইপারদের এলাকা দিয়েই নিয়ে যাচ্ছে,প্রিয়সীর কানে ব্লুটুথ ইয়ার কমিউনিকেশন লাগানো,স্নাইপার কমান্ডারের সাথ যোগাযোগ চলছেই,রেঞ্জের ভিতর আসার সাথে সাথে লক্ষ্যভেদী স্যুট এ্যান্ড স্পট ডেথ। পিছনেই ছিল প্রিয়সীদের গাড়ী,প্রিয়সী গাড়ি হতে নেমে নিজেদের গাড়িতে পগার পার। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৩২ সবাই গাড়ীর কাছে এসে দেখলো মন্ত্রীর ছেলের ডেথ বডি।প্রশাসন হুলুস তুলুছ,এবার কি পার পাবে মিশন ১?পোশাক পরিবর্তন করে দ্রুত ঘটনা স্থলে আসতে দেরী করা যাবেনা।কর্ন এবং প্রিয়সী উভয়েই ঘটনা স্থলে আসলো,কান্না ভেজা ব্যবহার উপস্থাপন করল মন্ত্রীর সামনে।তদন্তের কাজ শুরু হলো রাস্তায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরিক্ষা চলছে।গাড়ীর ড্রাইভারকে গ্রেফতার করা হয়েছে ছদ্মবেশে আসার কারনে ভাড়ায় চালিত চালক চিনতে পারেনি,আর এরকম ঘটনা কখনো ঘটেনি এ জন্য পরিক্ষার প্রয়োজন হয়নি।আর গাড়িতে গুলি লাগার সাথে সাথে ও নেমেই অন্য গাড়িতে উঠে চলে গেছে ওকে পিছু ধাওয়া করবে এটারও স্বরন ছিলনা।আর না থাকারই কথা একজন সাধারণ চালক গাড়ি চালাতে চালাতে হঠাৎ যদি তার গাড়ির উপর ফায়ার আসে তবে দিকবিদিক হারিয়ে ফেলায় স্বাভাবিক।তার পরেও ঘটনা তার গাড়িতে আইনের দৃষ্টিই তার যাচাই বাছাই করবে।মন্ত্রীর বাড়িতে শোকের মাতম,প্রিয়সী এবং কর্ণ আসতে ভূল করেনি।মুসলিম রীতিনীতিতে সৎকার সম্পনের কাজ শুরু হলো।মন্ত্রীর ছেলের বন্ধুরা অধিকাংশই গ্রেফতার তবে খুব নিকটতম একজন বন্ধু প্রিয়সীকে যে সে পছন্দ করেছিল এবং প্রিয়সী তার উপর বিরক্ত হয়েছিল বিষয়টি সে আঁচ করতে পেরেছিলো।আর পুলিশের তদন্তে সিসি ক্যামোরার ফুটেজে সার্ট প্যান্ট পরা হলেও শাররীক গঠন দেখে মহিলাই অনুমান করা যাচ্ছে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৩৩ পুলিশের নিকট ঐ বন্ধুর জবান বন্দীতে প্রিয়সী পুলিশের সন্দেহের তালিকায় চলে আসলো এবং প্রথমেই নজর বন্দী।যেহেতু তারা মিশনারী তাদেরকে গ্রেফতারের জন্য অবশ্যই উপযুক্ত প্রমান ছাড়া গ্রেফতার করা সম্ভব না।সিসি ক্যামেরার ফুটেজে শুধুমাত্র পিছনের অংশ বুঝা যায় এবং মহিলা মানুষ এটা চুল দেখে বুঝা যায় কিন্ত চেহারা বুঝা যায় না।পরিক্ষার জন্য প্রিয়সীকে পুলিশ ষ্টেশনে তলব করা হলো।তার আগেই প্রিয়সী চুল এবং হাটা অঙ্গ ভঙ্গী পরিবর্তন করে ফেললো।প্রিয়সী গ্রেফতার হতে পারে হায়ার কমান্ডকে আগেই জানানো হয়েছে।মন্ত্রীর অনেক তোড়জোড় থাকলেও রাষ্টশক্তি সামনের দিকে যেতে নারাজ।আর মন্ত্রীর ছেলেটাও তো তেমন ভালো না।মন্ত্রীর ছেলের নৈতিকতার তথ্য পূর্ব হতে সবার জানা।রাষ্টীয় বৃহৎ স্বার্থে রাষ্টশক্তি আর সামনের দিকে যেতে চাচ্ছেনা।এ পর্বে ছাড়া পেয়ে গেল প্রিয়সী।হত্যা হয়েছে প্রশাসন এখন কি করবে? গায়েবী কিছু লোকের নামে মামলা করে রাখলো। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৩৪ প্রশাসনের আর কোন ডাক হাক নেই,ও দিকে গোয়েন্দাদের সমাপনী অনু্ষ্ঠান,বৃদ্ধ প্রশিক্ষক খুবই অসুস্থ।বয়সের ভারে আর কুলিয়ে উঠতে পারছেনা ,হার্ট ব্লক করেছে দ্রুত সম্মিলিত সামরিক হাসাতালে নেয়া হলো।লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়েছে।গোয়েন্দাবাসে এক ধরনের শোক আর হতাশা নেমে আসলো বললেই চলে।গোয়েন্দাবাসের অনেক আকাংখা দীর্ঘ পরিক্রমার পর তারা যখন শপত নিতে যাচ্ছে ঠিক সেই সময়েই যার অবদানে আজ গোয়েন্দাবাস দাঁড়িয়ে আছে সে আজ মৃত্যুর পথযাত্রী।গোয়েন্দাবাসে হৈচৈ পড়ে গেলো সবাই হাসপাতালে বৃদ্ধকে দেখার জন্য রওয়ানা দিলো ।পথি মধ্যে সংবাদ আসলো বৃদ্ধ মারা গেছে।শোকের ছায়া নেমে আসলো গোয়েন্দাবাসে।সিদ্ধান্ত হলো আগামীকাল বৃদ্ধর লাশকে কফিনে সামনে রেখে তারপর শপথ অনুষ্ঠান হবে।পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী শপথ গ্রহনের জন্য সবাই প্রস্তুত,বৃদ্ধর লাশকে সামনে রেখে শুরু হলো শপত অনুষ্ঠান।গোয়েন্দাবাসের প্রথম ব্যাচের শ্রেষ্ঠ গোয়েন্দা নির্বাচিত হয়েছে পুরুষদের ভিতর রাজু আর নারীদের ভিতর নিপা ।গোয়েন্দাবাসে সিদ্ধান্ত হলো এই দুইজন শ্রেষ্ঠ গোয়েন্দাকে পার্শবর্তী দেশের সামরিক বাহিনীতে গুপ্তচর বৃত্তির জন্য পাঠানো হবে।তার পূর্বে দেশে একটা কাউন্টার ইন্সারজেন্সী অপারেশন করতে হবে।ইন্সারজেন্টদের মাফিয়া ডনকে গ্রেফতার করতে হবে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৩৫ বনবিহার অপারেশন বনবিহার বৌদ্ধ ধর্মের পবিত্র উপাসনালয়।কালা পাহাড়ের পাদদেশে গভীর অরন্যে অবস্থিত এই উপসনালয়।পাশেই পার্শবর্তী রাষ্ট্র।বৌদ্ধ ধর্মের ধর্মগুরুরা দীর্ঘ দিন যাবত এখানে উপাসনা করে আসছিলো।নিরব নিঃস্তব্ধ অরন্যের ভিতর একাগ্রতার সাথে তারা উপাসনা করে।বৌদ্ধ ধর্মের অনেক মানুষ এখান হতে ধর্মের দিক্ষা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ধর্ম প্রচারের কাজ করে আসছিলো।ধর্মের শান্তির বানী গুলো যখন সমাজে প্রচার হতে শুরু করে তখন ঐ এলাকার সুবিধাবাদী সন্ত্রাসীরা মানুষকে ধর্মের শান্তির এই পথ হতে বিরত করার জন্য নানান ধরনের দুর্ভিসন্ধি করে।তারা উপাসনালয়ের প্রধান ভান্তেকে জিম্মি করে কিছু সন্ত্রাসীকে ভান্তের পোশাক পরিয়ে তারা ঐ উপাসনালয়ে রাখে।এই সন্ত্রাসীদের কাজ হচ্ছে তাদের সাধারণ মানুষকে স্বাধীন একটি রাষ্ট্রের ভিতর নুতন আর একটি রাষ্ট্র গঠনের মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়ে নিরিহ জনগনের নিকট হতে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে শহরে গাড়ী বাড়ী করা। নিজেদের ছেলে মেয়েকে বিদেশে পাঠানো। নিজেরা ভোগ বিলাস করা আর সাধারণ মানুষকে যুগের পর যুগ মরনের ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে রাখা।তাদের ধরার জন্য রাষ্ট্র সন্তানদের সাড়াশী অভিযান ছিলো অব্যাহত।কিন্ত ধর্মের আড়ালে থাকার কারণে তাদেরকে ধরা যাচ্ছিলনা।সন্ত্রাসীদের মাফিয়া ডনটির অবস্থান এখন বন বিহারেই।সে লোকালয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর আভিযানিক তৎপরতার কারনে প্রধান ভান্তেকে জিম্মি করে নিজে বড় ভান্তে সেজে উপাসনালয়ে অবস্থান করছে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস৩৬ যে কোন ভাবেই হোক তাকে ধরতে হবে।রাজু ও নিপাকে এই অভিযানে নিয়োগ করা হলো।হাই কমান্ডের পক্ষ হতে তাদেরকে ডাকা হলো।অপারেশনের যাবতীয় নির্দেশিকা তাদের দেয়া হলো।পাশাপাশি বৌদ্ধ ধর্মের দীক্ষা তাদেরকে দেয়া হলো।নুতন একটা এনজিও সংস্থার এজেন্ডা নিয়ে তাদেরকে ওখানে পাঠানো হবে।রাজু ও নিপা নিজেদের সবকিছু গুছিয়ে নিচ্ছে,ভোরের ট্রেনেই শিলিগুড়ি হয়ে যেতে হবে মিজোরামের জলপাইতে।জলপাই বাংলাদেশ সীমান্তের পাশেই অবস্থিত কালা পাহাড়ের বন বিহার।সময়টা ছিলো শীতকাল, পাহাড়ী এলাকায় এমনিতেই শীত বেশি সে ভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে ওরা যাচ্ছে।সাইরাং রেলওয়ে স্টেশনে নেমে ওদেরকে বিকল্প ভাবে পৌছাতে হবে।ওরা শিলিগুড়ি হতে ট্রেনে চড়লো,ট্রেনের ভিতর খুব ভীড়।প্রথম শ্রেনীর আউট ডোর বন্ধ থাকার কারনে ওরা পরের বগীতে ওঠে এবং ভীড় পেরিয়ে নিজেদের কম্পারমেন্টে যাবার চেষ্টা করে।ভিড়ের ভিতর ছিনতাই কারীদের কবলে পড়ে নিপা, কিন্ত রাজু অত্যান্ত বিচক্ষনতার সাথে ট্রেনের ভিতর ফাইট করে ছিনতাই এর হাত হতে রক্ষা করে ছিনতাই কারীকে পুলিশে সোপর্দ করে।অতি কষ্টে নিজেদের আসনে বসে শীতের রাতে গল্পে গল্পে পথ চলছে।গোয়েন্দাবাসে দীর্ঘ দিন থাকলেও প্রশিক্ষনের জন্য এত কথাবার্তা কখনো হয়নি।এই সফরে দুজনের ভিতর ভালো একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়ে যায়।বন্ধুত্বের সম্পর্ক না থাকলেও স্বামী স্ত্রী সম্পর্ক করেই এই অভিযানে যেতে হবে এটাই সদর দপ্তরের আদেশ।পাঁচ মিনিট পরেই ট্রেন সাইরাং রেলওয়ে স্টেশনে পৌছাবে, এ্যাটেনডেন্ট বার্তা জানিয়ে গেল।ও দিকে মিজোরাম নিরাপত্তা বাহিনীকে গোয়েন্দা সদর দপ্তর হতে বিস্তারিত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।রাজু ও নিপা ট্রেন হতে নেমে লাগেজ নিয়ে কুলির জন্য অপেক্ষা করছিলো।ছিনতাই কারী চক্রের একটা দল ট্রেন থেকেই ওদের অনুসরন করে আসছিলো।ওরা ও নেমে আসে পাশে সুযোগের অপেক্ষায় ছিলো, রাজু পাশের দোকানে একটি পানির বোতল আনতে যেতেই ছিনতাই কারী চক্র নিপাকে আক্রমন করে বসলো।ও দিকে রাজুদের রিসিভ করার জন্য মিজোরাম নিরাপত্তা বাহিনীও স্টেশনে হাজির, নিপা সাহসীকতার সাথে ওদের মোকাবেলা করতেই নিরাপত্তা সদস্যরা হাজির হয়ে ওদেরকে গ্রেফতার জেলখানায় পাঠিয়ে দিল।জানা গেল ওরা জাংগাল খোরানার লোক।জাংগাল খোরানাই হল কালা পাহাড়ের মাফিয়া ডন।জাংগাল খোরানার অনেক লোক ধরা পড়েছে, এক প্রকার বিমুর্ষ বললেই চলে।আইনের ফাক ফোকড় খুজছে বের করার জন্য।দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এই মুহুর্তে রাজু ও নিপাকে জন স্বমুখে আনা যাচ্ছেনা। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৩৭ নিরাপত্তা বাহিনীর পরোক্ষ ছত্র ছায়ায় কালা পাহাড়ের পাশেই হেডম্যান কারবারীদের সহযোগীতায় একটি জন কল্যান মূলক এনজিও সংস্থা তৈরী করা হয়েছিলো রাজু আর নিপাকে এখানেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে।জীবনের ঝুকি নিয়ে তারা এখানেই আসলো।দুজনের কেউ রান্না বান্না জানেনা,না খেয়ে তো থাকা যাবেনা।মুড়ি বিস্কুট চানাচুর খেয়ে কতক্ষন থাকা যায়? এলাকার হেডম্যান কারবারী সহ অনেকেই তাদের দেখতে এসছে।নুতন বাবু মেম এসছে সাহায্য পাবে এলাকার মানুষের আনন্দের সীমা নেই। এই সংস্থা থেকে এলাকার গরীব,দুস্থদের মাঝে বিভিন্ন ধরনের সাহায্য সহযোগীতা করা হবে অনেক আগে থেকেই এলাকাবাসী তা জানে।তাদের রান্না বান্নার জন্য এক উপজাতী মেয়েকে নিয়োগ দেয়া হলো এবং তার কাজ বলে দেয়া হলো।এলাকা বাসী সবাই জানে ওরা স্বামী স্ত্রী।উপজাতী কাজের মেয়েটির নাম দেববতী।সন্ধার রান্না বান্নার কাজ শেষ করে ও চলে যায়।ও কখনো বেড রুমের ভিতরে প্রবেশ করেনা।রান্নাঘর হতে ডাইনিং পযর্ন্ত ওর চলাচলের সীমা বদ্ধতা।রাজু নিপা দুজন দু রুমে অবস্থান করে।দিনের কাজ শেষে ড্রইং রুমেই দুজন যাবতীয় পরিকল্পনা করে এবং নিজেদের তৈরী চা কফি খায়।পালা করে চা কফি তৈরী করে।মাঝে মাঝে হাস্য রসের গল্পও হয়।ওরা দেববতীকে যাবতীয় সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করার আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।দেববতী অনেক কথায় বলে কিন্ত আসল কথা বলেনা।নিপা ওকে ওর রুমে ডেকে নিল।রাজু পুরুষ মানুষ ওর সামনে অনেক কথা বলা যায়না।মেয়েরা এমনিতেই পুরুষদের সামনে কথা বলেনা তাছাড়া দেববতী আবার উপজাতী মেয়ে।উপজাতীদের কাছ হতে স্বজাতীর কথা বের করা অনেক কষ্টের ব্যপার।বেশ কিছুদিন এভাবেই চললো, ওদের নিকট একটা তথ্য এসছে হায়ার হেড কোয়ার্টার থেকে।সন্ত্রাসীদের ডন জাংগাল খোরানা ভান্তে সেজে কিয়াং ঘরে অবস্থান করে । নিপা প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই বাংলোর আসে পাসে হাটাহাটি করতো আর দেখতো উপজাতী মেয়েরা গুরুদের জন্য খাবার নিয়ে কিয়াং ঘরে যায়।নিপা দেববতীকে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করলে দেববতী খাবার নিয়ে যাবার কারণ বলে।নিপা দেখলো কিয়াং ঘরে ভান্তেদের জন্য খাবার নিয়ে যাওয়া এবং তাদের আশির্বাদ নেবার সুবাদে গিয়ে তথ্য নেয়া যাবে।রাতে রাজু নিপা বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা করলো।পরের দিন দেববতীকে ডেকে নিয়ে নিপা বললো আমি বৌদ্ধ ধর্মের দীক্ষা এবং গুরুদের আশির্বাদ নিতে কিয়াং ঘরে কি যেতে পারবো?তুমি একটু হেড ভান্তের সাথে আমাকে কথা বলিয়ে দিতে পারবে?বলতেই দেববতী বললো না মেম আপনাকে ওখানে যেতে হবেনা ওখানে শয়তান আছে।মানে?মেম জাংগাল খোরানা এই এলাকার বড় ডন সে ভান্তে সেজে ওখানে থাকে যাতে আর্মিরা ধরতে না পারে।ওমা সে কি কথা ?উনার কাজ উনি করবে আমাদের কাজ আমরা করবো।না মেম তুমি বুঝবানা ও বাহিরের মেয়েদের দিকে লোলুপ দৃষ্টি দেয় , ছলে বলে কৌশলে তাদের ইজ্জত নষ্ট করে।আচ্ছা শোন তোদের আর ভান্তেরা ওখানে থাকেনা? হ্যাঁ থাকে।ঠিক আছে আমি তাদের কাছে যাবো তুই শুধু আমাকে পরিচয় করিয়ে দিবি। অরন্যে গোয়েন্দাবাস৩৮ ইন্টার মিশন নিপা সুন্দর পোশাক পরে দেববতীকে সাথে নিয়ে কিয়াং ঘরের উদ্দেশ্য রওয়ানা হলো,রাজু ও সাথে আছে।রাজু বাহিরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় আছে এবং সদর দপ্তরের সাথে পরিকল্পনা মাফিক যোগাযোগ চলছে।নিয়োম মোতাবেক দেববতীর সহায়তায় নিপা কিয়াং ঘরের প্রধান ভান্তের হাতে ফ্রুট বাক্স দিয়ে পা ছুয়ে মাথা নীচু করে আশির্বাদ নিল এবং প্রাথমিক দীক্ষা নেয়া শুরু করলো।জাংগাল খুরানা আজ এখানে নেই।বাহির হয়ে দেববতী টানা নিঃশ্বাস নিয়ে বললো মেম আজ আপনার ভাগ্য খুব ভালো,শয়তানটা আজ এখানে নেই।নিপা মনে মনে ভাবছিলো আসল লক্ষ্যবস্তুই নেই।কি ভাবছেন মেম? না কিছু না চলো।নিপা আস্তে করে বললো এই ঐ লোকটা থাকে কোথায়? কে ?ঐ যে তুই বললি কোন শয়তানের কথা।ও আচ্ছা খুরানা? ও তো প্রিন্সিপালের রুমেই থাকে ওখানে দেখলেননা দুইটা খাট?ও আসলে পরে প্রিন্সিপাল ওখানে থাকেনা।দুর দুরান্ত থেকে মহিলা নিয়ে এসে ও ওখানে সময় কাটায়।ওর ভয়তে কালা পাহাড়ের কোন লোক কথা বলতে পারেনা।এ সপ্তাহে নিপা দেববতীকে সাথে নিয়ে নিয়মিত কিয়াংঘরে গুরুদের কাছে দীক্ষা নিতে যায়।ওর কাছে উন্নত মানের সিকিউরিটি ভিডিও ক্যামেরা আছে।যাতে সরাসরি লাইভ ভিডিও হয় এই জন্য রাজুকে আর ওখানে যাওয়া লাগেনা।কোন অনাকাংখিত ঘটনা এড়াবার জন্য মিজোরাম নিরাপত্তা বাহিনী সার্বক্ষন ষ্ট্যান্ডবাই থাকে এবং রাজু রুম হতেই মনিটর করে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৩৯ রবিবার ভোরে জাংগাল খুরানা স্ব দলবল নিয়ে কিয়াং এলাকায় হাজির,আতংক বিরাজ করছিলো কিয়াং এলাকায়।এদিকে নিপা প্রতিদিনের মত আজো কিয়াংয়ের দিকে গুরুর কাছে যাচ্ছে।ভান্তের রুমের চারিদকে অস্ত্রধারী লোকেরা পাহারা দিচ্ছে, মনে হচ্ছে কাকে যেন পাহারা দিচ্ছে,প্রিন্সিপাল নিপাকে দেখেই দৌড়ে আসলো নিপার কাছে।ফিস ফিস করে বললো মা আজ ও দিকে যেওনা ওখানে একজন বিশেষ ব্যক্তি আছে বলতেই খুরানা বহির হয়ে নিপার দিকে দৃষ্টি খেলো প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলছে।খুরানা প্রিন্সিপালকে ডেকে বললো ওকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিন।প্রিন্সিপাল বরলো স্যার ও আমার আত্মীয়।নিপা বললো টিঠ আছে লোকটা ডাকছে যায়না দেখি কি বলে।না মা ও লোক ভালো না ওর দৃষ্টি খারাপ।খুরানা আবার বল লো কি এত গল্প হচ্ছে তোমার আত্মীয় মানে আমার ও আত্মীয় আর বে উপজাতী আত্মীয় হয় কেমনে? নিপা সব বুঝে গেছে, বিনয়ের সাথে প্রিন্সিপালকে বললো ঠিক আছে গুরু গিয়েই দেখিনা কি বলে? ও দিকে সদর দপ্তর ও রাজু গোপন ক্যামেরার মাধ্যমে সব মনিটর করছিলো। নিপা খুরানার রুমে প্রবেশ করে সম্মান জানালো, খুরানা জিজ্ঞাসা করলো এখানে আসার কারণ।নিপা খুব বিনয়ের সাথে বললো আমরা এখানে একটা এনজিওতে কাজ করি ।আর বৌদ্ধ ধর্মের দীক্ষা নিচ্ছি।খুরানার লোলুপ দৃষ্টি নিপার উপরে পড়লো।নিপার বুকের জামার বোতামের সাথেই ক্যামেরা।সদর দপ্তর হতে মনিটর করা হচ্ছে।খুরানা নিপার কাছে এসে বসলো।ওদিকে মিজোরাম আর্মির স্ট্যান্ডবাই ফোর্স মুভ করেছে,রাজু ও মোবাইলে সব দেখছিলো,নিপাকে এখনই রক্ষা করতে হবে।খুরানার জেল খানার লোকজন ও বের হয়ে খুরানার নিকট আশির্বাদ নেবার জন্য এসে দেখে যার জন্য ওরা জেল খানায় গিয়েছিলো সে ডনের পাশে।ওরা নিপাকে দেখে চিনে ফেললো এবং বললো বস ওতো পুলিশের লোক ওর জন্যই আমরা জেল খানায় গিয়েছিলাম।খুরানা নিপার ওড়না ধরে টান দিতেই ক্যামেরাটা খুরানা দেখে ফেললো এবং ছিনিয়ে নিলো।এই ফাকে রাজু খুরানার উপর ঝাপিয়ে পড়লো।তুমুল ফাইট হচ্ছিল,এক পর্যায়ে দু জনকেই বন্দি করার উপক্রম সময়ে মিজোরাম ফোর্স এসে হাজির হলো এবং দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী জাংগাল খুরানাকে বন্দির মাধ্যমে কালা পাহাড় বাসীরা মুক্তি পেলো। অরন্যে গোয়েন্দাবাস৪০ মিশন ২ হাই কমান্ডের মাধ্যমে প্রিয়সী এবং কর্ণকে জানানো হয়েছে যে খুব শিঘ্রই রাজু ও নিপা নামের দুজন গুপ্তচর এ দেশে প্রবেশ করবে।তাদের যাবতীয় নিরাপত্তা এবং সহযোগীতিা করতে হবে।তারা প্রথমে প্রিয়সীদের অফিসে আসবে এবং ওখান হতেই তাদেরকে সহযোগীতা করতে হবে।শহর থেকে অনেক দূরে অবস্থিত ক্যান্টনমেন্ট।শহর থেকে একটি রাস্তা ক্যান্টনমেন্টের ভিতর হয়ে উপ শহরের দিকে গেছে।মেইন রাস্তার সাথেই ক্যান্টনমেন্টের প্রবেশ ফটক।রাজু এবং নিপা এই ক্যান্টনমেন্টেই অপারেশন পরিচালনা করবে।এই ক্যান্টনমেন্টের এমন একজন সৈনিকের মাধ্যমে তারা তথ্য সংগ্রহ করে অপারেশন পরিচালনা করবে আমরা এখন সেই সৈনিকের জীবন নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে গল্পের মূল রহস্যে প্রবেশ করবো।সৈনিকটা ছিলো মফঃস্বল এলাকার একটা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে।নাম কাদু সামাদ উদ্দীন সবাই কাদু বলে ডাকে,অত্যান্ত ডানপিটে একটা ছেলে।বাবা তৃতীয় শ্রেনীর একজন সরকারী কর্মচারী।বেতনে অর্ধেক টাকা কাদুর পিছেই ব্যয় করতে হয়।টাকা পয়সা না দিলে বাবা মা কে গালিগালাজ করে এবং বাড়িতে ভাংচুর করে।মান সম্মানের দায়ে বাধ্য হয়ে পিতামাতা ওকে টাকা পয়সা দেয়।ওর বাবা অতিষ্ঠ হয়ে একদিন চরম বকাবকি করে এবং বলে তোর মত ছেলে আমার প্রয়োজন নেই তুই বাড়ি হতে বেরিয়ে যা।কাদু রাগ করে বাড়ি হতে বেরিয়ে যায় এবং এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেয়।বন্ধুর বাড়ি ছিলো জেলা শহরে। কয়েক দিন থাকার পর জেলা ষ্টেডিয়ামে সেনাবাহিনীতে লোক ভর্তি শুরু হলে কাদু ওখানে দাঁড়িয়ে যায় এবং সেনাবাহিনীতে সাধারণ সৈনিক পদে ভর্তি হয়ে যায়েএ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার নিয়ে ও বাড়িতে চলে আসে।আজ বাড়িতে আর কোন ঝড়ি ঝগড়া নেই শান্ত মন,পিতা মাতা আশ্চার্য্য ব্যাপার কি? ওর কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছেনা মনে হচ্ছে ভালো হয়ে গেছে।কারো সাথে কোন কথা বলেনা,দুপরবেল খাবার খেতে গিয়ে কাদু ওর মাকে বললো, আমি আর তোমাদের কাছে কোনদিন টাকা পয়সা চাইবোনা এবং কোনদিন তোমাদের আর কষ্ট দেবনা।ওর মা বললো কেন বাবা তোর কি হয়েছে? তুই এভাবে কথা বলছিস কেন?তোর বাবা না হয় রাগ করে কি না কি একটু বলেছে তাই বলে তুই এইভাবে রাগ করে থাকবি? মা আমি তো এটা বলছিনা আমি সেনাবাহিনীতে ভর্তি হয়ে গেছি ,আমি আগামী পরশু চলে যাবো, আমার জন্য দোয়া করিও।কাদুর চাকরী হবে এটা গ্রামের কোন লোক বিশ্বাস করতে পারেনি।সবাই মনে করছিলো এটা ওর একটা চালাকী।আসলেতো বাস্তবতা ভিন্ন,চাকুরীতো সত্যই হয়েছে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস৪১ কাদু সবার কাছে বিদায় নিয়ে চাকুরীতে চলে আসলো।ছয় মাসের দুঃসাহসিক প্রশিক্ষনের চ্যালেঞ্জ কাদুকে গ্রহন করতে হবে।কাদু কি প্রশিক্ষন গ্রহন করে সৈনিক হতে পারবে?কঠিন প্রশিক্ষন চলছে,সবার মনে আনন্দ ফুর্তি থাকলেও কাদুর মনে কোন আনন্দ ফুর্তি নেই।সে আসার পর বাড়ীতে বাবা মায়ের নিকট একটা চিঠি লিখে বাড়িতে কোন ঠিকানাও দেইনি।পিতামাতা দীর্ঘদিন যাবৎ সন্তানের চিন্তায় আছে।কাদুর মনের ভিতর একটা জিদ কাজ করছিলো,যে সে পিতামাতাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছে এমন কষ্ট দিয়েছে যে পিতামাতা তার প্রতি অতিষ্ঠ।এই জিদে সে আর বাড়ি যাবেনা।প্রশিক্ষনের সময় শেষ হয়ে আসছে,সবার মনে আনন্দ, সবাই বাড়ি যাবে অনেকে সেনা ক্যান্টিন হতে মা বাবা ভাই বোনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কেনাকাটা করলেও কাদুর ভিতর এমন কোন প্রতিক্রিয়া নেই।মা বাবাও জানেনা কোথায় ট্রেনিং করে।ওর প্রশিক্ষনের সময় একজন সুবেদার ছিলো সে কাদুকে খুব ভালবাসতো।শপথ গ্রহন প্যারেড শেষ,সবাই পনের দিনের ছুটিতে নিজ নিজ বাড়ী যাবে।সেন্টার হতে গাড়ি রিজার্ভ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে,সবাই টাকা জমা করলেও একটি ছেলে টাকা জমা করেনি।সবাইকে ডাকা হলো কে এই ছেলে ?পিছনে একটি ছেলে হাত খাড়া করেছে,নাম কাদু মিয়া।সুবেদার সাহেব ওকে ডেকে ঘটনা জিজ্ঞাসা করলে ও জীবনের দুঃখ কষ্টের কথা গুলো বলে আর জানায় ও এখন বাড়ি যাবেনা।সুবেদার সাহেব কাদুকে বললো ঠিক আছে তুমি আমার বাসায় বেড়াবে,আমার বাসায় থাকবে।সময় মত শপথ অনুষ্ঠান শেষ হলে সবাই ছুটি চলে গেল আর সুবেদার সাহেব কাদুকে নিয়ে বাসায় গেলো।কাদু সুবেদার সাহেবের বাসায় থাকে,সুবেদার সাহেবের কোন সন্তানাদী নেই।বেগম সাহেব ও খুব ভালো মানুষ কাদুকে একেবারে সন্তানের মতই ভালোবাসে।কাদু ও খুব সম্মান দিয়ে কথা বলে।ছুটি প্রায় শেষের পথে,সুবেদার সাহেব সিওকে বলে কাদুকে ট্রেনিং সেন্টারেই রাখার ব্যবস্থা করেছে।পরিকল্পনা মোতাবেক কাদু ব্যাটালিয়ন সদরেই রয়ে গেল।কাদুর সৈনিক জীবন ভালই কাটছিলো।সেন্টারে অধিনায়কের একজন বার্তাবাহক প্রয়োজন,বিষয়টি সুবেদার সাহেব জানার পর কাদুর নামটি অধিনায়কের নিকট উপস্থাপন করলে অধিনায়ক সম্মতি জ্ঞাপন করেন।কদিনের ভিতরেই কাদু একেবারে ব্যাটালিয়নের ভালো এবং চালাক সৈনিকে পরিনত হয় এবং সকলের প্রশংসা অর্জন করে।কাদুদের ইউনিটের পাশ দিয়েই গেছে পাবলিক রাস্তা,রাস্তার পাশে দীর্ঘ সময় যাতে সৈন্যরা না দাঁড়াই তার জন্য রেজিমেন্টাল পুলিশ সদা সজাগ আছে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৪২ হায়ার হেড কোয়ার্টারের আদেশে নিপা এবং রাজু বর্ডার পার হয়ে এই দেশে প্রবেশ করবে। তার পূর্বেই এই দেশের জাতীয় পরিচয় পত্র এবং সীমান্ত এলাকার একটা গ্রামের নাম ও মেম্বর চেয়ারম্যানের নাম আয়ত্ব করানো হলো এবং এবং পূর্বেই প্রিয়সী কর্ণ সীমান্ত এলাকায় তাদের মাঠ কর্মীদের দিয়ে অনেক টাকার বিনিময়ে একটা বাড়ি ঠিক করে রেখেছে।যাতে রাজু ও নিপা প্রথমেই এখানে এসে উঠতে পারে।এদেরকে শিখিয়ে দেয়া হয়েছে যে আত্মীয় বলে পরিচয় দিবে।রাজু নিপাকে পূর্বেই এই বাড়ির ঠিকানা ও গুগল ম্যাপে মার্কিং করে দেয়া হয়েছে। গোয়েন্দাবাস হতে বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা চলছে,সবাই মিলে বিদায় দিলো।বাসে প্রথমে নদীয়া শান্তিপুর হয়ে চাপড়া থানার হাটখোলা বর্ডার পার হবে।নিজেস্ব বর্ডার সিকিউরিটি গার্ডের সহায়তায় ওরা এ দেশে অনুপ্রবেশ করবে।বর্ডারে কাঁটা তারের বেড়া ওদের কাছে গুরুত্বপূর্ন কোন কিছুই নেই।শুধু ব্যবহারের জন্য কিছু কাপড় চোপড় নিয়ে ওরা পরিকল্পনা মোতাবেক রওয়ানা দিয়েছে এবং বর্ডারে পৌছে গেছে।বর্ডার এলাকার লোক উপার্জনের ধান্দায় খুবই ব্যস্ত থাকে,কখন কি মাল পাচার করবে,কি মাল নিয়ে আসবে?এই জন্য ওরা আর তেমন কারো খোজ খবর রাখেনা।এরই সুযোগে রাজু নিপা সীমান্ত পার হয়ে গুগল ম্যাপের সহায়তায় একেবারে গ্রামে হাজির ওদের এখানে রিসিভ করার জন্য পূর্বেই মাঠকর্মী দুজন হাজির আছে।ঐ দিন আবার ঐ গ্রামে যাত্রাপালা গান চলছিলো,বাড়ির মালিক ছিলো চেয়ারম্যানের চামচা।চামচা চেয়ারম্যানকে বললো স্যার ওপার থেকে আমার মায়ের বোনের ছেলে মেয়েরা এসছে,ওরা একটু যাত্রা দেখবে।চেয়ারম্যান বললো ঠিক আছে নিয়ে আসো।যাত্রা অনুষ্ঠানে ওরা চেয়ারম্যানের আসে পাশেই বসেছে এবং কথা বার্তায় যাত্রা দেখার কাজ ও চলছে।পরদিন সকালে উঠে মাঠ কর্মীদের সাথে গাড়িতে উঠলো প্রিয়সী কর্ণদের বাসার উদ্দেশ্যে।পথেই পুলিশ চেকপোষ্ট,কৌশলে চেকপোষ্ট পার হয়ে চলে আসলো প্রিয়সী কর্ণদের বাসায়। অরন্যে গোয়েন্দাবাস৪৩ নুতন মানুষ নুতন দেশ,এ দেশেই এদের সহায়তায় থাকতে হবে এবং লক্ষ্যে পৌছাতে হবে।স্থানীয় প্রতিনিধিদের মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে ক্যান্টনমেন্টের পাশেই মিশনের অধিনে একটি দাতা সংস্থার নামে অফিস খোলার কাজ চলছে,ক্যান্টনমেন্ট আপত্তি করলেও স্থানীয় সরকারের হস্তক্ষেপে তা আবার বাস্তবায়িত হয়।সীমান্ত এলাকার চেয়ারম্যানকে হাত করে সেখানকার ঠিকানায় পূনরাই তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবস্থা করে প্রফাইল প্রস্তুত করা হয়।অফিস তৈরীর পূর্ব পযর্ন্ত নিপা রাজু প্রিয়সীদের এখানেই থাকবে।এখন তাদের কর্ম পরিকল্পনার বিস্তারিত নির্দেশনা চলছে এবং এদেশের সার্বিক পরিস্থিতি এবং উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কারা কিভাবে সাহায্য করবে সে সম্পর্কে অবগত হচ্ছে ।ক্যান্টনমেন্টের পাশের লোকেরা আবার সঠিক পরিচয় না নিয়ে কাউকে বাসা ভাড়া দেয়না।তৃতীয় শ্রেনীর মাঠ কর্মীরা নিপা এবং রাজুর জন্য একটি বাসা ভাড়া করেছে।নিপা রাজু বিভাগীয় শহর থেকে এখন ক্যান্টনমেন্টের পাশে ভাড়া বাসাতে উঠছে।ওদের জন্য আলাদা আলাদা বাসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।এটা ওদের একটা গোয়েন্দা কৌশল,অফিসের ষ্টাপ হিসাবে কাজ করবে।একজন ধরা পড়লে আর একজন যাতে বাঁচতে পারে। তাছাড়া ক্যান্টনমেন্টের ভিতর হতে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে,ক্যান্টনমেন্টের নিরাপত্তার জন্য অসংখ্য গোয়েন্দা কর্মী আছে, তাদের দৃষ্টিকে ফাঁকী দিয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।এই জন্য রাজু বাহিরে থেকে কাজ করবে আর নিপা ভিতরে তথ্য সংগ্রহ করে বাহিরে রাজুর কাছে পৌছাবে।ক্যান্টনমেন্টের ভিতর রাস্তা দিয়েই যেতে হবে অফিসে।প্রথম দিন প্রবেশ পথে নিপাকে মিলিটারী পুলিশের মুখোমুখি বুকে দাদা সংস্থার পরিচয় পত্র ঝুলানো।মিলিটারী পুলিশ জিজ্ঞাসা করতেই পরিচয়পত্র দেখিয়ে বললো আমি দাতা সংস্থার নুতন অফিস স্টাপ।বিস্তারিত ঠিকানা নিয়ে মিলিটারী পুলিশ সম্মানের সাথে বললেন ঠিক আছে যান।মাঠ কর্মীরা দূর হতেই অবলোকন করছিলো যে প্রবেশ পথে কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা? কিছুক্ষন পর রাজু ও একই পথ অনুস্বরন করে ভিতরে প্রবেশ করলো। নিপা প্রতিদিন অঙ্গভঙ্গী করে ক্যান্টনমেন্টের ভিতর দিয়ে যায়,কেউ যদি ওর দিকে একবার তাঁকায় তবে আগ্রহভরে ও তার দিকে দুইবার তাঁকায় এবং ভালোমন্দ জিজ্ঞাসা করে। অরন্যে গোয়েন্দাবাস৪৪ অধিনায়কের অফিস রাস্তার সাথেই,কাদুমিয়া বেশ কদিন লক্ষ্য করছে যে,রাস্তা দিয়ে হেলেদুলে এক সুন্দরী যায়,ওর সাথে কথা বলার খুব আগ্রহ জাগলো।আজ অপেক্ষায় আছে কখন আসবে?দূর হতে নিপাকে দেখে কাদুমিয়া রাস্তায় বের হয়ে ক্যান্টিনের দিকে হাটা শুরু করলো, যাতে মাঝপথে থামিয়ে একটু কথা বলা যায়।কাছাকাছি আসতেই কাদু ওকে ছালাম জানালো এবং আপু বলে সম্মোধন করলো এবং নিপার প্রসংশা করলো,নিপাও একধাপ এগিয়ে বললো আপনার কথাগুলো খুব সুন্দর।আজকে এ পযর্ন্তই।নিপা যতটুকু ডোজ দিয়েছে কাদু তাতেই দুর্বল,কাদু ক্যান্টিন হতে ফিরে অধিনায়কের অফিসের সামনে দায়িত্ব পালন করে আর নিপার হাস্যজ্বল মুখে বলা আপনার কথাগুলো সুন্দর প্রশংসাটি মনে করে।কাদু রাতের বেলা ক্যান্টিন হতে নিপাকে গিফ্ট দেবার জন্য কিছু টকঝাল লজেন্স নিয়েছে,আগামীকাল সাক্ষাতে হাতে ধরিয়ে দিবে।সকালে পকেটে করে লজেন্সের প্যাকটি নিয়ে গেছে, অপেক্ষায় আছে নিপা কখন আসবে?ভাবতেই অধিনায়কের ডাক,ভিতরে প্রবেশ করলো,অধিনায়ক বললেন এখুনি ব্যাংকে যাও এবং টাকা উটিয়ে আনো।চেক নিয়ে বাহির হচ্ছে আর ভাবছে,না সৈনিক জীবনে কোন আসা পুরন হবেনা,টাকা উঠানোর আর সময় হলোনা?প্রথম দিনের আশা ই গুড়ে বালি।গাড়ি নিয়ে ব্যাংকে গেলো,বার বার ঘড়ি দেখছে,নিপাও টার্গেট করে আছে আজ অবশ্যই দেখা করবে ,নিপা ওখান দিয়ে আসতেই না কেউতো নেই,আবার রিটার্ন করলো দূর হতে দেখে আসে কিনা?ক্যান্টিনের পাশে রাস্তায় রেজিমেন্টাল পুলিশকে বললো ভাই আপনাদের ক্যান্টিনে কি যাওয়া যাবে?রেজিমেন্টাল পুলিশ বললো না,বাহিরের লোক এ্যালাও না তবে ইউনিটে আপনার কোন আত্মীয় থাকলে তার সাথে আসতে পারেন।বলতেই চলে যাচ্ছে ও দিক হতে কাদু টাকা নিয়ে আসতেই নিপার সাক্ষাত।কাদু চালককে গাড়ি থামাতে বললো,এবং বললো আমার খালাতো বোন পাশেই অফিসে চাকুরী করে ওর সাথে একটু কথা বলি।গাড়ি হতে নেমে হাই নিপা বলে ভালোমন্দ জিজ্ঞাসা করলো এবং পকেট হতে লজেন্সের প্যাকেটা ধরিয়ে দিলো।নিপা বললো আমি আগামীকাল আপনাদের ক্যান্টিনে যাবো।কাদু বললো ঠিক আছে বিকালে আসবেন,বলবেন আমার খালাতো ভাই।বলে আজকের মত বিদায় দিয়ে দিলো। অরন্যে গোয়েন্দাবাস৪৫ বাসায় গিয়ে নিপা এবং রাজু সারা দিনের কর্ম নিয়ে বিশ্লেষন।আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে রশিকথা ও চলছে।রাজু রশিকথা করে বলেই ফেললো দেখো প্রেমে পড়ে যেওনা।নিপা হেসে বললো, প্রেমে পড়লেতো তোমার প্রেমেই আগে পড়তে হবে।পরবর্তী দিন কি করতে হবে দুজন এখন সেই পরিকল্পনা করছে।নিপা খুব সাজুগুজু করে বিকাল বেলা কাদুর সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে ওয়ানা দিল।কদিন যাতায়াত করতে করতে এমপি গেটের নিরাপত্তা প্রহরীরা নিপাকে চিনে গেছে এই জন্য আর জিজ্ঞাসাবাদ করেনা।কাদু ওদিকে নিপার অপেক্ষায় আছে,নিপা হাটতে হাটতে কাদুদের ক্যান্টিনের কাছে,নিপাকে রিসিভ করে কাদু ক্যান্টিনে বসার ব্যবস্থা করে দিলো এবং ওয়েটারকে নাস্তা দেবার জন্য বললো।দুজনে মিলে গল্প করতে করতে বিকালের হালকা নাস্তা শেষে ক্যান্টিনের কসমেটিক স্পেসে গিয়ে নিপা কিছু কসমেটিক কিনলো।আশ্চার্যের বিষয় সবকিছু টাকাটা নিপাই পেইড করলো।সামনের হলিডেতে যেন নিপার বাসায় বেড়াতে যায় নিপা সে দাওয়াত দিতেই কাদু জিজ্ঞাসা করলো বাসায় কে কে থাকেন? না ভাড়া বাসা পাশের বাসায় একটা ভাই থাকেন,এছাড়া কেউ নেই।ঠিক আছে যাবো।ছুটির দিনের অপেক্ষায় আছে কাদু।কাদুর মনটা কেমন যেন ফুরফুরা এবং আনন্দ।নিপার নিকট উন্নত মানের ফোন থাকলেও কাদুর নিকট কোন ফোন নেই। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৪৬ অধিনায়ক সুবেদার সাহেবকে ডেকে কথা বলছেন,দুদিনের কাজে আর্মি হেডকোয়ার্টারে চালাক চতুর একটি ছেলে পাঠাতে হবে।অধিনায়ক বললো দুদিনের জন্য আমাকে একটা রানার দিয়ে কাদুকে পাঠান ও চালাক চতুর আছে ।সুবেদার সাহেব বললো ঠিক আছে স্যার।কাদু মিয়াকে আদেশ শুনাতেই মনে হলো কাদু মিয়ার মাথায় বজ্র পড়ার উপক্রম।কাদু সুবেদার সাহেবকে বললো, স্যার আমাকে না পাঠালে হয়না? না অধিনায়ক নিজে বলেছেন,তোমাকেই যেতে হবে।হলিডেতে কাদুর আর নিপার বাসায় বেড়াতে যাওয়া হলো না।কাদু রাতের গাড়িতেই রওয়ানা দিলো।নিপা ক্যান্টনমেন্টের ভিতর দিয়ে যাচ্ছে,কাদু প্রতিদিন রাস্তায় থাকে আজ নেই কেন যেন অস্বাভাবিক লাগছে নিপার নিকট।ইউনিটের প্রা ই সদস্যই জানে ওটা কাদুর খালাতো বোন,আবার অনেকে লাভার বলেও সন্দেহ করে।নিপা রাস্তা দিয়ে দুইবার যাতায়াত করলো কিন্ত কোন খবর নেই।অবশেষে আর পি কে জিজ্ঞাসা করলো যে ভাই কাদু নেই? আরপি বললো উনিতো দুদিনের জন্য হেডকোয়াটারে গিয়েছে।নিপা বললো ও আচ্ছা ঠিক আছে।আরপি বললো আপু কোন সমস্যা? নিপাঃনা সমস্যা না , বাড়ি যাবে কিনা জানার জন্য ও আমার খালাতো ভাই এই জন্য। দুদিন কাদুর কোন সংবাদ নেই,সময়টা কাদুর ও যেমন ভাল লাগছিলোনা,নিপার উদ্দেশ্য হাসিলের ভিতরেও একটা অন্তরায় সৃষ্টির মত মনে হলো।বিষয় গুলো নিয়ে রাজুর সাথে বসে আলোচনা করছিলো নিপা।রাজু বললো দেখো তথ্য সংগ্রহের জন্য কোন ব্যপারে তাড়াহুড়া করা যাবেনা,একটা তথ্য সংগ্রহ করতে প্রয়োজনে সময় বেশি লাগুক, তারপরেও তথ্যটি যেন নির্ভযোগ্য হয়।ওদিকে কাজ সেরে রাতে কাদু চলে এসছে,প্রহর গুনছে কখন সকাল হবে? অরন্যে গোয়েন্দাবাস৪৭ সকাল বেলা ফ্রেস হয়ে অধিনায়কের অফিসে।নিপার ও আসার সময় হয়ে গেছে,ক্যান্টিনে রাস্তার পাশে হাটাহাটি করছে নিপার অপেক্ষায়।নিপা আসলো কথা হলো,নিপা বললো আপনি আমাকে না বলে সফরে গেলেন এটা কেমন হলো?কাদু হেসে বললো দেখো না মানে দেখুন,নিপা ঠিক আছে আমাকে তুমি করে বললেই আমি বেশি খুশি হবো,তাহলে তুমিও আমাকে তুমি বলো,কাদু বললোঃ আচ্ছা শো আমারতো কোন ফোন নেই,তাছাড়া আমি হঠাৎচলে গেছি এজন্য বলতে পারিনি। নিপাঃদেখো প্রথম দেখাতেই আমি কেন যেন তোমার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছি,দুইটি দিন খালী তোমার জন্য অপেক্ষা করেছি,কখন তুমি আসবে?নিপার এমন কথা শোনার আসা কাদু কখনো কল্পনাও করেনি। কাদুঃনিপা আমি আসলে ধারনা ও করিনি যে তোমার মত এত সুন্দর এবং চাকুরী জীবি মেয়ে একজন সাধারণ সৈনিককে ভালো বাসবে। নিপাঃআগামীকাল হলিডে তুমি বাসায় আসো। কাদুঃ হ্যাঁ আমি আগামীকাল যাবো,ঠিক আছে তোমার অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে,তুমি যাও।নিপা আজকের মত চলে গেলো। নিপাঃ বাসাটা একটু গোছগাছ করছে,নিজেকে একটু আকর্ষনীয় করে সেজে গুজে নিচ্ছে,রাজু দরজায় কড়া নাড়লো,নিপা বললো থামো আসছি।দরজা খুলতেই রাজু অবাক কি ব্যাপার ?এত সকালে সাজুগুজু? আজ ওদের ছুটির দিন আজ ও এখানে বেড়াতে আসবে। রাজুঃ এত সাজগোজ বাসা গোছানো কেনো? নিপাঃ কি বলো? একটা নুতন মানুষ আসছে,কি মনে করবে?তাছাড়া আমরাতো আমাদের ফায়দা হাসিল করবো মাত্র। রাজুঃ দেখো আবার দুর্বল হয়ে পড়োনা। নিপাঃ তোমাদের ছেলেদের এখানেই সমস্যা, দেখো রাজু গোয়েন্দাবাসে তো এসব ব্যাপারে আমাদের আগেই শিক্ষা দেয়া হয়েছে।আমরাতো দেশের স্বার্থে আমাদের জীবন যৌবন সব কিছু বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। রাজুঃ ঠিক আছে দাও,তোমার যা ইচ্ছা তুমি তাই করো,এক প্রকার রাগান্বিত হয়ে রাজু বের হয়ে গেলো। নিপাঃ এই রাজু শোন ,চলে যাচ্ছো কেনো আমার কথা শোন, চলেই গেলো। অরন্যে গোয়েন্দাবাস৪৮ মিষ্টির প্যাকেট হাতে করে কাদু আসছে,নিপা কাদুকে রিসিভ করলো। কাদুঃ কি ব্যাপার এত আয়োজন কেনো? আরে আমি তো এত বড় মানুষ না তাই এত কিছু করতে হবে। নিপাঃবিষয়টা আসলে এরকম না আমি এ্যারেজমেন্ট তাক করতে পারিনা,হয় কম হয় না হয় বেশি হয়,একটা হবেই। কাদুঃসর্বনাশ তোমার মত মেয়ে আমার বৌ হলেতো আমার বারোটা বাজবে। নিপাঃ কেনো? তুমিতো তখন পাশে থাকবে,তুমি পাশে থাকলে সব ঠিক হয়ে যাবে। কাদুঃ তাহলে কি আর নুতন করে প্রস্তাব দেয়া লাগবে? নিপাঃ বুঝলামনা কিসের প্রস্তাব? কাদুঃ না বোঝার ভান করছো, নিপাঃ না সত্যি বলছি বুঝিনি,কিসের প্রস্তাব? কাদুঃ বিয়ের প্রস্তাব,বলতেই নিপা হো হো করে হাসি শুরু করলো।তো হাসির কি আছে? নিপাঃ একটু ফান করলাম,হ্যা বিয়ে করবো, সামনে একটা পরিক্ষা আছে ওটাতে পাশ করার পর তোমার সাথে বিবাহ করবো,তোমার বাড়িতে সবাই রাজী হবেতো? কাদুঃ ও ভারটা আমার উপর ছেড়ে দাও। নিপাঃ দেখো নাস্তা না করে দুজন গল্পে মেতে আছি,আগে নাস্তা করো,আমি লাঞ্চের ব্যবস্থা করি। কাদুঃ এই তুমি না বললে তোমার এক ভাই থাকেন উনি কোথায়? নিপাঃ আপন ভাই না দুসম্পর্কের ভাই ঐ পাশের বাসাতে থাকে।লাঞ্চের ব্যবস্থা করতে করতে কাদুর সাথে কথা বলছিলো।তোমার কাছে একটা বিষয় একটু জানা দরকার। কাদুঃ হ্যাঁ বলো, নিপাঃ আচ্ছা আমি ক্যান্টনমেন্টে থাকি আর তোমাদের ক্যান্টনমেন্ট সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা,তুমি একটু বসো আমি চুলাই ভাতটা দিয়ে আসছি,ভিতরে গিয়ে মিনি টেপ রেকর্ডারটা ব্লাউজের ভিতরে অন করে আসলো,হ্যাঁ বলো। কাদুঃহ্যাঁ কি শুনতে চাও বলো। নিপাঃ তোমাদের ক্যান্টনমেন্টে একজন নুতন প্রধান এসেছে,কি যেন নামটা ভূলে গেছি, কেন বিরাম খুরানা,ও হ্যাঁ বিরাম খুরানা,তোমার সিও টু আইসি কে? কাদুঃ ওমা তুমি সিও,টুআইসি বুঝো? নিপাঃ কেন? তোমরা আর্মির লোক একাই সব জানো নাকি? কাদুঃ না সে কথা আমি বলছিনা,এগুলো আর্মিদের হিসাব বাহিরের লোক তো জানার কথা না। নিপাঃ শোন আমি কিন্ত আর্মির বৌ হতে চলেছি,আমার কিন্ত সব জানার দরকার আছে। কাদুঃ তার ইউনিটের সব আফিসার্স এবং গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিদের নাম বলে দিলো। নিপাঃ আরে আমি কি এত কিছু তোমার কাছে জিজ্ঞাসা করেছি? তোমাদের আসে পাশে থাকি এই জন্য দু চারজনের নাম জানা দরকার তাই। কাদুঃ সমস্যা কি আমি না হয় দুজনের নাম বেশিই বললাম। নিপাঃ ও কে ওকে।চলো ডাইনিংয়ে,খাবার খেয়ে নিই,বসে বসে খাওয়া আর গল্প চলছে। কাদুঃ নিপা আজ অনেক হয়েছে,চলে যেতে হবে,সন্ধায় স্যারের বাসায় যেতে হবে। নিপাঃ ঠিক আছে,যেতেতো হবেই,ঠিক আছে আগামীকাল দেখা হবে।কাদু বাসা হতে বিদায় নিলো। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৪৯ নিপা রেকর্ডার খুলে পরিক্ষা করছে ঠিকমত ধারন করা গেছে কিনা,হ্যাঁ সব কিছু ক্লিয়ার।রাজুকে ফোন দিলো আসার জন্য।রাজু ফোন ধরে ঠিক আছে আসছি।নিপা ল্যাপটপে ডিক্স লাগিয়ে রাজুর জন্য অপেক্ষা করছিলো।রাজু এসে দরজার কড়া নাড়তেই নিপা দরজা খুলে দিলো এবং ল্যাপটপ অন করে বললো দেখো। রাজুঃ আশ্চার্য্য হয়ে কিভাবে এত তাড়াতাড়ি সম্ভব হলো ওকে কনভিন্স করা? ধন্যবাদ নিপা গো এ্যাহেড,আমি আসলে ভূল বুঝছিলাম। নিপাঃ না না আসলে আমি হইত তোমাকে বোঝাতে পারেনি। রাজুঃঠিক আছে যা হবার হয়েছে এখন কফি বানাও কয়দিন তোমার হাতের কফি খাওয়া হয়নি। নিপাঃ আজ তুমি বানাও,আমি খাবো,আর শোন এগুলো হেড কোয়ার্টারে পাঠিয়ে দাও। রাজুঃ তাহলে হয়েছে,আচ্ছা আমি বানাবো,তুমি শুধু একটু আমার পাশে থাকবা,পরিমাপটা এওকটু বলে দিবা,চলো কিচেনে। নিপাঃ না আমি যাবনা তুমি একা একা যা পারো তাই বানাও আমি তাই খাবো।রাজু কফি বানাতে গেলো,কিছু সময় পর থাকতে না পেরে নিপাও চুপি চুপি কিচেনের দরজায় গিয়ে দাঁড়িয়ে রাজুর কফি বানানো উপভোগ করলো।অবশেষে দুজন খফি খাওয়া শেষ করলো। সন্ধা ঘনিয়ে আসছে,রাজু তাড়াহুড়া করছে, চলে যাবার জন্য,নিপা বললো ডিনার করে যাও,বাসায় গিয়ে কি খাবা? রাজুঃ দুপরে বাহিরে খেয়ে এসছিলাম,রাতে ব্রেড জেলী খেয়ে শুয়ে যাবো। নিপাঃ এ দেশের মেয়েরা খুব মায়াবী এ দেশে বিয়ে করো,রান্না বান্নার সমস্যা হবেনা। রাজুঃ তাহলে তোমার কি হবে? আর তুমি কি কম মায়াবী? মিশন শেষ আমি তোমাকে বিয়ে করবো। নিপাঃ আশা করা ভালো অতি আশা ভালো না, রাজুঃ মানে? তোমার কি কোন চয়েজ আছে নাকি? নিপাঃ ব্যাপারটা তা না,তোমার আমার পেশাটা কি একবার চিন্তা করেছো? কখন কি হয় কোন পরিস্থিতি নিজেদের উপর নেমে আসে আমরা কেউ জানিনা।হ্যাঁ সময় কাটানোর জন্য তুমি আমি যতটুকু প্রয়োজন বন্ধুর মত একে অন্যের সহযোগী হয়ে থাকবো,তারপর মিশন শেষে রাষ্ট্রের কাছে আমরা প্রস্তাব রাখবো,রাষ্ট্র এলাও করলে বিবাহ হবে। রাজুঃ হয়েছে ভাই,অনেক হয়েছে,আমি যায়,ও তোমাকে একটা বিষয় জানানো হয়নি,কর্ণ সাহেব ফোন করেছিলো,উনি আমাদের যেতে বলেছে,হাই কমিশন উনার বাসায় আসবে,আমাদের দেখতে চেয়েছে। নিপাঃ কবে যেতে বলেছে? রাজুঃ বাহির হতে হতে বললো আগামী মাসে পাঁচ তারিখে।ঠিক আছে থাকো এ নিয়ে পরে পরিকল্পনা করবো। বাসায় গিয়ে রাজু নিপার সংগ্রীত তথ্য সমুহ হায়ার হেডকোয়াটারে পাঠিয়ে দিলো। অরন্যে গোয়েন্দাবাস৫০ হায়ার হেডঃকমান্ডারঃ তথ্য পেয়ে অনেক খুশি,অন্যান্য অফিস কর্মকর্তাদের ডেকে তথ্য সমুহ নিয়ে বিশ্লেষন করা শুরু করলো। কাদু নিপাকে বিয়ে করবে এ ব্যাপারে সুবেদার সাহেবের পরামর্শ নিচ্ছে।সুবেদার সাহেব বললো তুমি অনেকদিন বাড়িতে যাওনি,আগে বাড়ি যাও,বাবা মায়ের কাছে অনুমতি নিয়ে তারপরে এসে আমাকে বলিও।কাদু দশ দিনের ছুটিতে বাড়ি যাবে,পরের দিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে,ছুটি যাওয়ার কথা নিপাকে বলার জন্য।নিপা আসলে নিপাকে সব কথা বললো। নিপাঃ তুমি বাড়ী যাবা আমাকে নিয়ে যাবা না? কাদুঃ বাবা মায়ের সাথে তোমাকে নেয়ার ফাইনাল কথা বলার জন্য যাচ্ছি, নিপাঃ মানে? তোমার কথা বুঝলামনা। কাদুঃ নিপা তোমার সাথে আমার বিাহের কথাটা পাকা করার জন্য বাড়ি যাচ্ছি,বাবা মা মত দিলে আমি সামনের মাসেই বাবাকে তোমাদের বাসায় পাঠাবো। নিপাঃ তুমি কি পাগল হয়েছো? আমি না তোমাকে ও দিন বললাম আমার একটা পরিক্ষা আছে,পরিক্ষা দেবার পর আমি তোমাকে সব বলবো,আর আমার বাড়ি হতে আমাকে এখন বিবাহ দিবেনা।আমাকে বিবাহ করলে বাড়িতে না বলে করতে হবে, এতে আমার বাবা মা কি মনে করবে বলো? কাদুঃ ঠিক আছে,তোমার বাবা মাকে জানাতে হবেনা,আমার বাবা মা জানলেই হবে। নিপাঃ পাগলামী করোনা,তোমার কত টাকা ব্যাংকে আছে? তুমি যে বেতন পাও তাতে কি তুমি চলতে পারবা,আর আমিতো হারিয়ে যাচ্ছিনা,আমার পরিক্ষাটা হয়ে যাক ,আমি নিজ থেকেই তোমাকে বলবো। কাদুঃ ঠিক আছে,আমি বিকালের গাড়িতে যাবো,দশ দিন পর আসবো, মন খারাপ করোনা। নিপাঃ তোমাদের গ্রামে ফোন নেই? আমার নাম্বারতো তোমার কাছে আছে,ফোন দিও। কাদুঃ ভাই আমি পল্লীর ছেলে,আমাদের গ্রামে কোন ফোন নেই,দেখি উপ শহরে এসে দেয়া যায় কিনা? ওকে বাই। নিপাঃ বাই,আবার দেখা হবে। অফিসে নিপা আর রাজু গল্প করছে,কাদুর মনোভাব বিস্তারিত রাজুর সাথে বলার পর রাজু বললো তুমি কি থার প্রতি কোন দুর্বলতা প্রদর্শন করেছো? নিপাঃ দুর্বলতা কেন প্রদর্শন করবো? আমাদের যে সুত্র আছে আমি সে ভাবেই এগুচ্ছি।তবে তার প্রস্তাবটাতো অনেক জটিল,এ মুহুর্তে আমাদের পরবর্তী কার্যছক্রম কি হতে পারে এটা নিয়ে আলোচনার অবকাশ আছে। রাজুঃ আমরা কর্ণ সাহেবদের ওখানে যায়,হাই কমিশনের সাথে সাক্ষাত করে আমরা একটা পরামর্শ করবো। রাতের ট্রেনে দুজন রাজধানীতে রওয়ানা দিলো,ভোর বেলা স্টেশনে কোন রিক্সা টেম্পু কিছুই নেই।নিরাপত্তা বাহিনীর লোকরা ঘোরাফেরা করছে।সূর্য্য উঠলে রিক্সা চেপে দুজন রওয়ানা দিলো কর্ণদের বাসায়। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৫১ গেটে দারোয়ান,গেটের সামনে দাঁড়াতেই আরো কয়েকজন ফিল্ড কর্মী এসে হাজির।পরিচয় নিয়ে ইন্টারকমে অনুমতি নিতেই ওরা দুজন নীচে এসে নিপা রাজুকে রিসিভ করলো।থাকার জন্য গেষ্টরূম আগে থেকেই ব্যবস্থা করা আছে,প্রিয়সী জিজ্ঞাসা করলো কি একরুম না দুই রুম? নিপাঃ মানে? কি বলছেন দিদি বুঝিনি। প্রিয়সীঃ দুজন একরূমে থাকবা না আলাদা থাকবা? সাইড হতে কর্ণ বললো দুই রূমে কেনো?একরূমে দাও।কেনো তোমরা বিয়ে করোনি? নিপাঃ না না দাদা,বিয়ে কোথায় এখন,আগে মিশন শেষ করবো তার পরে বিয়ে। কর্ণঃ মিশন শেষ এতো সোজা? বললে আর হয়ে গেলো,আমরা ও এ রকম বলে ছিলাম যে মিশন ওয়ান শেষ করে দেশে গিয়ে বিয়ে করবো কিন্ত এই দেখো মিশন ওয়ান চলতেই মিশন টু শুরু,সেই জন্য ভাবগতি দেখে দুজন বিয়ে করে নিয়েছি,এখন চলতে থাক। নিপাঃ ঠিত আছে আমরা এক রূমেই থাকবো অসুবিধা হবেনা।ও একদিন খাটে থাকবে আমি নীচে থাকবো, পালা করে থাকবো সমস্যা নেই। প্রিয়সীঃ না দরকার নেই রূমের অভাব নেই ও ফান করলো তোমাদের সাথে একটু মজা নিলো আর কি।তোমাদের জন্য আলাদা আলাদা পাশাপাশি দুরূম আছে ওখানে থাকবা। সবাই মিলে দুপরে লাঞ্চ করলো,প্রিয়সী কর্ণ স্কুলে কোন মত হাজিরা দিয়েই বাসাতে।আগামীকাল হাই কমিশনে যেতে হবে।পরের দিন সবাই মিলে হাই কমিশনে গমন।হাই কমিশনের গেটে ছিলো ঐ দেশের নিরাপত্তা রক্ষী, হাজারো প্রশ্ন,প্রিয়সী কর্ণের সহায়তায় গেট পার হলো।কনফারেন্স রূমে নিয়ে যাওয়া হলো, কিছক্ষন পর পরিচিতি পর্ব শেষে মূল আলোচনা।নিপা এবং রাজুদের বর্তমান পরিস্থিতির কথা হাই কমিশনে ব্যক্ত করতেই হাই কমিশন বললো প্রয়োজনে বিবাহ করবে, তার পরেও তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।তবে বিবাহের লোভ দেখিয়ে তার কাছ হতে যত বেশি সম্ভব তথ্য আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে তাকে জিম্মি করে উদ্দেশ্য হাসিল করতে হবে।গোয়েন্দাদের জন্য নিজেস্ব আকাংখা বলতে কিছু নেই রাষ্ট্রের আকাংখায় তাদের আকাংখা।এর ভিতর যে নিজেকে যতটুকু আনন্দের মাঝে রাখতে পারে।যাবতীয় নির্দেশনা নিয়ে ফিরে আসলো বাসায়।নিপার রূমে দুজন মিলে পরামর্শ কি করা যায়?বিবাহ করলে কি লাভ এবং না করলে কি লাভ বা ক্ষতি? এ নিয়ে দুজনের ভিতর চরম বিশ্লেষন।আজকের মত কোন সমাধানে পৌছাতে পারলোনা, যার যার মত দুজন দুজনের রূমে চলে গেলো। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৫২ নিপা বিছানা গোছগাছ করে কিছুক্ষন পর বাহির হয়ে দেখছে রাজুর ঘরের দরজা খোলা, রাজু জুতা পায়ে দিয়ে শুয়ে পড়েছে।নিপা ঐ অবস্থায় জুতাটা খুলে চাদরটা গায়ের উপর টেনে দিলো। রাজু আসলে ঘুমাইনি ও ভাবছিলো পরবর্তী সিদ্ধান্ত কি হতে পারে? রাজু উঠে আবার নিপার দরজায় নক, ভিতর থেকে কে? আমি রাজু, বলতেই নিপা দরজা খুলে কি তুমি ঘুমাওনি? ও আমারে দিয়ে জুতা খুলে নিলা? ঠিক আছে, রাজুঃ আরে শুনবাতো, চিন্তা করছিলাম তোমাকে কি পাবো? না হারাবো? এই ফাঁকেই তুমি জুতা খুলা শুরু করলে আমি কি করবো বলো? সেবাটা নিয়েই নিলাম। নিপাঃ দুষ্ট কোথাকার, যাও ঘুমাও।তোমার সাথে ঘুমাই? হ্যাঁ ঘুমাইও সারা জীবন ঘুমাইও এখন যাও, বলে আদর ঠেলা ঠেলে রুমে পৌছে দিলো। সবাই মিলে সকালে নাস্তার টেবিলে গল্প,প্রিয়সী জিজ্ঞাসা করলো কি বললো হাই কমিশন? রাজুঃ তাদের সিদ্ধান্ত পরিস্কার,জীবনের বিনিময়ে হলেও লক্ষ্যে পৌছাতে হবে। কর্ণঃ অবশ্যই,আগেই বলেছি এর ফাঁকে যতটুকু পারা যায় নিজেদের আনন্দ নিজেরা খুজে বের করা,মনে রাখতে হবে ত্যাগের মাঝেই কিন্তু তৃপ্তি লুকিয়ে থাকে।যারা ত্যাগ না করে ভোগের পিছে দৌড়াই তারা কিন্ত ভোগ করতে পারেনা। নিপাঃ একদম সলিট কথা,আমরা ওটাই চেষ্টা করবো। রাজুঃ মুখ ভেংচী দিয়ে ঠিক আছে দেখবোনি,কত ত্যাগ করতে পারো। প্রয়সীঃ এই মেয়েরা কিন্ত ত্যাগের পাহাড়,যদি ইচ্ছা করে তবে সে কিন্ত হিমালয় জয় করতে পারে। নিপাঃ হ্যাঁ, দেখছো আপুও আমার পানে। কর্ণঃ তোমরা থামবা? আগে নাস্তা শেষ করো।তারপর যার যা করার তাই করবা। রাজুঃ ট্রেনের টিকিট করতে হবে,কাউকে পাঠাবেন? কর্ণঃ ও নিয়ে চিন্তা করতে হবেনা,আমি বলে দিচ্ছি রাতের ট্রেনের টিকিটের জন্য। নিপা রাজু কর্ণদের বাসা থেকে বিদায় নিয়ে স্টেশনে,হালকা হালকা ঠান্ডা ছিলো, ট্রেনে চড়ার পর ঠান্ডাটা মনে হয় একটু বেশি লাগছিলো।পাশাপাশি দুজনের সীট কেবিনে দুজনই,আর কেউ নেই হালকা ঠান্ডায় নিপা রাজু দুজন একটু বেশি কাছাকাছি।ঘুমে নিপা কখন যে রাজুর কাঁধের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেছে তার খেয়ালই নেই।রাজু ও দুই হাতে কখন বেড় পেকিয়ে ধরেছে তার ও খেয়াল নেই।নিপা হঠাৎ চমকে চোখ খুলে দেখে তার মাথাটা রাজুর কাঁধে,রাজুর হাত দুটো তার উপরে, মুচকী হেসে আবার ঘুমিয়ে গেলো,ঘুমের ভিতর স্বপ্ন রাজ্যে দুজনের আনন্দঘন বিচরণ।হঠাৎ দরজায় ঠক ঠক ঘুম ভেঙ্গে দেখলো দুজন দুজনকে ধরে আছে কি সুন্দর মুহুর্ত বেঁচে থাক সারা জীবন, বাবু উঠেন স্টেশনে গাড়ি চলে এসছে।টানা নিঃশ্বাস নিয়ে দুজন দুজন হতে আলাদা হয়ে নেমে পড়লো ট্রেন হতে।হঠাৎ নিপার ফোন বেঁজে উঠলো,অপরিচিত নাম্বার রিসিভ করতেই ওপার থেকে কাদুর গলা ভেসে আসলো,আমি কাদু,কেমন আছো? নিপা লাউড স্পিকার দিয়ে রাজুকে ইশারা করলো কাদুর ফোন,নিপা বললো হ্যাঁ আমি ভালো তুমি কেমন আছো? বললাম বাড়ী গিয়ে ফোন দিবা,এই এতদিন পর মনে পড়লো? কবে আসবা? কাদুঃ আগামী পরশু যাবো। নিপাঃ বাসা হয়ে তারপর ভিতরে যাবা।তাহলে রাখি? ঠিক আছে রাখো বাই। নিপা রাজু রিক্সা নিয়ে স্টেশন হতে বাসার দিকে রওয়ানা দিয়ে স্বপ্নের কথা ভাবছিলো।নিপা রাজুর গায়ে ঠেল দিয়ে এই কি ভাবছো? রাজুঃ মেুচকী হেসে না কিছু না, নিপাঃ না কিছু একটা নিয়েতো অবশ্যই ভাবছো, রাজুঃ সত্যি বলবো? ট্রেনের স্বপ দেখা আর দুজনের যাত্রার মুহুর্তটা নিয়ে ভাবছিলাম। নিপাঃ কল্পনা আর স্বপ্নে মানুষ অনেক কিছু দেখে ও ভাবে,সবগুলো যদি সত্য হতো তবে ছোট বড়ের প্রশ্ন থাকতোনা।পুরন হোক তোমার স্বপ্ন আর কল্পনা। রাজুঃ যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি আর কল্পনা করি সেতো চায়না আমার স্বপ্ন পূরন হোক। নিপাঃ রেগে বললো,চুপ থাকো বাসায় গিয়ে কথা বলো। অরন্যে গোয়েন্দাবাস৫৩ বাসায় নামার পর নিপা রাজুকে বললো তোমার রুমে না আমার রুমে আসো।রুমে নিয়ে নিপা বললো আসলে তুমি কি চাও বলো? আমাকে বিয়ে করবে?চলো আজই করবো,আমাকে ভোগের সাধ জাগে? বলে সাড়ি টান দিয়ে সরাতেই রাজু ঠ্কি করে দিয়ে বললো আমার কথা বুঝতে চেষ্টা করো। নিপাঃ না আমি বুঝতে পারি তিুমি কি চাও।আমরা দেশের জন্য একটা মিশনে এসছি,আমাদের পরিনাম কি কেউ জানিনা,এখন তুমি আমাকে বিয়ে করলে,তুমি কি এটা স্বাভাবিক ভাবে নিবে? যে আমি তথ্য সংগ্রহের জন্য অন্য ছেলের সাথে মিশে অঙ্গভঙ্গীর অভিনয় করে তথ্য নিই?গুরুত্বপূর্ন তথ্য নেবার জন্যতো আমাকে আরো নীচে নামতে হতে পারে সেটাকে তুমি কিভাবে নিবে? আমার সেই প্রশ্নের উত্তর আজকে দিবা। রাজুঃ একটু সংযত হও ,আমি বলিনি তুমি এসব করবেনা,সব করবে।রাষ্ট্রের জন্য তোমাকে যা করতে হয় তুমি তাই করবে,এতে আমার কোন দিন আপত্তি ছিলোনা আর থাকবেও না, তবে আমি তোমাকে ভালোবাসি তুমি আমার। নিপাঃ শোন আবেগের ভালোবাসা ভালো না, এখন আবেগে পড়ে বিবাহ করবা যখন দেখবা আমি গোয়েন্দার জন্য কোন ছেলের সাথে চলছি প্রথম প্রথম দুই একদিন মানলেও তারপর আর মানবানা।ভালোবাসো ঠিক আছে,আমিও তো তোমাকে কম ভালোবাসিনা। রাজুঃ ঠিক আছে আজকের মত তর্ক বাদ।আমি যাই,ভাত রান্না করো দুপরে তোমার এখানে লাঞ্চ করবো।বলে চলে গেলো ।নিপাও বাসার সবকিছু ঠিকঠাক করে রান্নার কাজ শুরু করলো। গোলমাল কাটিয়ে গতানুগতিক অফিসের কায্যর্ক্রম শুরু হলো,কাদুও বড়ি হতে রওয়ানা দিয়েছে,অপেক্ষায় আছে নিপা রাজু।জয়েন্ট করার পর কাদু আবার অধিনায়কের অফিসে,সময়ের অভাবে আসতি পথে নিপার সাথে সাক্ষাত হয়নি।অফিস শুরু হবার আগেই ক্যান্টিনের পাশে বসে আছে,অনেকদিন পর উভয়ের সাথে সাক্ষাত হবে।নিপা অন্যদিনের মতই আসছে,ক্যান্টিনের কাছে দেখা। কাদুঃ ভিতরে আসো,কফি খাই।নিপা ভকুশল বিনিময় করে ভিতরে গেল,বাড়ীর সবাই কেমন আছে জিজ্ঞাসা ককরলো। নিপাঃ আগামীকাল বাসায় আসতে পারবা? বেশি না ঘন্টা দুয়েকের জন্য,একটি বিশেষ পরামর্শ আছে। কাদুঃ কেবল ছুটি হতে আসলাম,তারপরেও তুমি যখন বলছো ঠিক আছে দেখি স্যারকে বলে যাওয়া যায় কিনা? কাদুর চলাচল এবং ভাবমুর্তি লক্ষ করে ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দারা কাদুর পিছে লাগা শুরু করেছে।অধিনায়কের রানার দেখে কেউ কিছু বলতেও পারছেনা।দুদিন পর কাদু নিপার বাসায়। নিপাঃ রিসিভ করে বেড রুমে নিয়ে গেলো,পাশাপাশি বসে বাড়ির সব খবরা খবর নেয়া শুরু করলো।এক পর্যায়ে বললো আমার সামনে একটা ভৌগলিক পরিচিতি মূলক পরিক্ষা আছে,সারা জীবন পল্লিতে কাটিয়েছি,তেমন কিছু চিনিনা,তাছাড়া শুনলাম আমদেরকে মানচিত্র সম্পর্কে প্যাক্টিক্যাল প্রশ্ন করবে আমিতো মানচিত্রের কিছুই বুঝিনা।আমাকে কি একটু ব্যবস্থা করে দিতে পারবে? কাদুঃ ম্যাপ নিয়ে আসো আমি তোমাকে বুঝিয়ে দিচ্ছি। নিপাঃ আরে মিয়া ম্যাপ থাকলেতো আমি নিজেই চেষ্টা করতাম,তোমাদের অফিস থেকে একটা ম্যাপের ব্যবস্থা করে দাওনা। কাদুঃ দেখো আমাদের ম্যাপগুলো খুবই সিক্রেট,বের করা নিষেধ,তারপর ও তুমি যখন বলছো তখন চেষ্টা করে দেখি কি করা যায়,বলতেই নিপা কাদুকে জড়িয়ে ধরে একটা আদর করে দিলো,কাদু ও আরো একধাপ সামনে এগিয়ে যেতেই নিপা বললো পরে আগে ম্যাপ নিয়ে এসে আমাকে কিছু শিখাও তারপর। অরন্যে গোয়েন্দাবাস ৫৪ কাদু ওদিনের মত চলে আসলো এবং ইউনিটে এসে ধান্দায় আছে কিভাবে কোথায় থেকে একটা ম্যাপ সংগ্রহ করা যায়? উপাই না পেয়ে লাইব্রেরীর তালা ভেঙ্গে গোপনে একটা ম্যাপ বের করে আবার তালাটা লাগিয়ে রাখলো এবং পেটের ভিতর লুকিয়ে লাইনে এনে বক্সে রাখলো।পরদিন বিকালে লুকিয়ে কাদু নিপার বাসায় ম্যাপ নিয়ে হাজির। নিপাঃ গেট খুলে আশ্চার্য্য, কি ব্যাপার কাদু তুমি? কাদুঃ হ্যাঁ আমি, তুমি না আমাকে বললে ম্যাপ আনার জন্য, এই নাও। কি ভিতরে যেতে বলবা? নিপাঃ ও হ্যাঁ আসো, ভিতরে তখন রাজু অবস্থান করছিলো।রাজুর সাথে কাদুর পরিচয় করিয়ে দিলো।কাদুর হাতে সময় কম। কাদুঃ আসলে আমার হাতে সময় নেই আমি পরে আসবো, বলে কাদু চলে আসলো। নিপাঃ কাদুকে বিদায় দিয়ে রাজুর নিকট ম্যাপটি নিয়ে গেলো,দুজনের আনন্দের সীমা নেই। অনেকদিন পর গুরুত্বপূর্ন একটি তথ্য পাওয়া গেছে।এই ম্যাপে এ দেশের সকল সামরিক স্থাপনা বিদ্যমান রয়েছে।ম্যাপের ছবি তুলে স্ক্যান করে তাদের হায়ার হেড কোয়ার্টারে পাঠিয়ে দিলো। নিপাঃ রাজু তোমার এ্যাসিভ বলো, রাজুঃ মানে? কিসের এ্যাসিভ? নিপাঃ এই যে একসাথে এতদিন আছি, আমিতো দুইটা তথ্য পেলাম, তুমি কি পেলে? তাই বলছি। রাজুঃ হেসে বললো সও তাই? এ্যাসিভ,আমি যে তোমার পাশে আছি এটাই গোয়েন্দা কার্য্যক্রমের সব চাইতে বড় এ্যাসিভ।কি নিজেকে অন্যরকম মনে করছো নাকি? নিপাঃ এই দেখো কিছু না বলতেই রাগ,তোমার এতো রাগ কেনো বলো তো? রাজুঃ আমার খুব মনে পড়ে আমার মা আমাকে খুব কষ্ট করে ঘুম পাড়িয়েছিলো, আমি দিনে ঘুমাতাম না, রোদে খেলা করতাম,তাই মা ওদিন জোর করে ঘুম পাড়িয়েছিলো,ঘুম থেকে উঠে দেখি আমি গাড়ির ভিতর,তারপরেতো গোয়েন্দাবাসে নিয়ে আসলো।মায়ের চেহারাটা এখনো যেন ছায়া ছায়া মনে পড়ে। নিপাঃ তোমার বাড়ি কোথায় মনে পড়েনা? রাজুঃ না ঐ স্মৃতিটা ছাড়া আর কিছু মনে পড়েনা। নিপাঃ আমারতো কোন কিছুই মনে পড়ে না, কে বাবা? কে মা? কিছুই জানিনা,আচ্ছা আমরা এখানে আসলাম কিভাবে? রাজুঃ গ্রান্ড ফাদার থাকলে আসলে বিষয়টি জানতে পারতাম।আমাদের ভজা, ফুলকী বা ম্যামরা হইত কিছু জানতে পারে। নিপাঃ কিন্তু এখনতো জানার কোন সুযোগ নেই।ঠিক আছে আমরা মিশন শেষে বিষয়টি নিয়ে ঘাটাঘাটি করবোনি। রাজুঃ বাদ দাও ওসব আজাইরা চিন্তা ভাবনা।যার জন্য এসছি আগে সেই কাজ করি। গোয়েন্দাবাসে ম্যাপ পাবার পর এদেশের সকল সামরিক স্থাপনা সমুহ লক্ষ্যবস্তুতে পরিনত করা হলো।এটা একটা স্বাধীন সার্বোভৌম রাষ্ট্র।স্বাধীনতার পুর্বে এই দেশটি ঐ দেশের অংশ ছিলো,নানা কারনে বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে এবং কিছু দিনের ভিতর বিশ্বের উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে স্থান করে নিতে সক্ষম হয়।এই দেশের উন্নয়নের পিছে যাদের অবদান তারা এ দেশের বুদ্ধিজীবি নেতৃত্ব দানকারী সম্প্রদায়।ওরা নানা বিচার বিশ্লেষন করে পরিকল্পনা করলো এই দেশকে নেতৃত্বশূন্য করতে হবে।পরবর্তী কায্যক্রমের জন্য প্রিয়সী কর্ণকে হাই কমিশনে ডেকে বিস্তারিত ব্রিফিং করা হলো।সিদ্ধান্ত হলো এ দেশের ক্ষমতাসীন দ্বিতীয় সারীর নেতাদের পিছে টাকা পয়সা ব্যায় করে তাদেরকে পরবর্তী নেতৃত্বের লোভ দেখিয়ে তাদের দ্বারা প্রথম শ্রেনীর বুদ্ধিজীবিদের মাঠশূন্য করা।কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে অনুপ্রবেশকারী গোয়েন্দা সম্প্রদায়।প্রিয়সী কর্ণ বাসায় এসে স্নাইপার স্কোয়ার্ডের কমান্ডারদের এবং গোয়েন্দা মাঠ কর্মী নেতাদের ডাকা হলো এবং বিস্তারিত নির্দেশনা দেয়া হলো।রাজু নিপাকেও বিষয়টি জানানো হলো।রাজু নিপার জন্য বিশেষ কোন কর্ম প্রনালী আছে কিনা জানতে চাইলে তাদের জন্য কাজ একটাই সামরিক বাহিনীর যাবতীয় তথ্য উপাথ্য এবং ভাবমূর্তি তারা সংগ্রহ করবে।এই দেশের ভিতর একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য গোয়েন্দা নেতারা এই দেশের ধর্মপ্রাণ কিছু ধর্মীয় নেতাদের জিহাদের নামে ব্রেইন ওয়াশ করে বুঝালো যে তোমরা সৎ মানুষ ,রাষ্ট্রক্ষমতা তো তোমাদের হাতে থাকা দরকার কিন্ত সরকারতো তোমাদের কোন মূল্যায়নই করছেনা।এক কাজ করো তোমরা কিছু লোক যোগাড় করে একটা বাহিনী প্রস্তুত করো তোমাদের সকল প্রকার সাহায্য সহযোগীতা আমরা করবো।যে সমস্ত ধর্মীয় নেতাদের কোন চাকুরী বাকরী ছিলোনা তারা তাদের জিহাদের নামে অনেক টাকা পয়সা দিয়ে জংগী বাহিনী তৈরীতে সহায়তা করে।যারা দরিদ্র,বেকার তাদেরকে টাকা পয়সা দিয়ে ব্রেইনকে ওয়াশ করে জিহাদের কথা বলে মাঠে নামিয়ে দেয়, শুরু হয় জিহাদের নামে অরাজগতা।কৌশলে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিদের দূর হতে স্নাইপার স্যুট করে হত্যা করা হচ্ছে।হিমসিম খাচ্ছে রাষ্ট্রের প্রশাসন ব্যবম্থাপনা।দেশের গোয়েন্দা বিভাগ ও কোন ক্লু খুজে পাচ্ছেনা।রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের চোখে ধর্মীয় লোকরা মনে হচ্ছে যেন সন্ত্রাস হিসাবে চিহ্নিত হয়ে গেছে।ধর্মীয় পোশাক আসাক পরে তারা যেখানেই যায় সেখানেই তাদেরকে সন্দেহ করা হয়।রাষ্ট্রের পক্ষ হতে সাধারণ ধর্মীয় নেতাদের ধর পাকড় শুরু করা হলো যারা আসলেই নির্দোষ।পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রকৃত ধর্মপ্রান ধর্মীয় নেতারা মসজিদ,মক্তব সহ বিভিন্ন সভা সমাবেশে তারা জংগীবাদ এবং জিহাদ এক জিনিষ না বিষয়টি ঢালাওভাবে প্রচার করে জনগণকে প্রকৃত সত্য অনুধাবনে সহায়ক হলেও ততদিনে ক্ষতি হয়ে গেছে অনেক বেশি।শত্রু দেশের বেশ কয়েকজন স্নাইপার ধরার পর তাদের নিকট হতে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

২০০কোটি টাকায় জামায়াতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে হেফাজত নেতা মুহিবাবুল্লাহ বাবু নগরীকে

গত কয়েকদিন হলো হেফাজত নেতা মুহিব্বুল্লাহ বাবু নগরী হঠাৎ জামায়াতের বিরুদ্ধে কোন ইস্যু ছাড়াই বক্তব্য দেয়া শুরু করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ...